Home জাতীয় ‘যুক্তরাষ্ট্রের আকর্ষণীয় অংশীদার হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ’

‘যুক্তরাষ্ট্রের আকর্ষণীয় অংশীদার হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ’

by Shohag Ferdaus
উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী

সফররত মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগান বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আকর্ষণীয় অংশীদার হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বাইরের পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহের কারণ দীর্ঘ সময় ধরে এখানকার স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, এখানকার ভোক্তাদের সংখ্যা, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীর উপস্থিতি।

১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন স্টিফেন বিগান।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন,‘আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। সবাই জানে আমাদের মূল্যবোধ ও নীতি আছে। আমাদের অবস্থান সবসময় স্বাধীন। আমরা দেশের স্বার্থের জন্য যা যা দরকার, তাই করব।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেইজন্য তারা আমাদেরকে স্বাধীনভাবে দেখছে, দিল্লির চেহারা দিয়ে দেখে না। শুধু দিল্লির চেহারা দিয়ে দেখলে এখানে আসতেন না। এখানে তারা এসেছে আমাদের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে তারা বন্ধুত্বটা আরও গভীর করতে চায়।’

ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে স্টিফেন বিগান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা হয়। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন স্টিফেন বিগান।

স্টিফেন বিগান বাংলাদেশকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বললেও এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার কী আলোচনা হয়েছে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত উদ্যোগ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বা আইপিএসে বাংলাদেশকে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।

যৌথ ব্রিফিং শেষে আলোচনায় আইপিএস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী বলেছে, জানতে চাইলে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আইপিএস নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আইনের শাসন, রোহিঙ্গা সমস্যা, বিনিয়োগ, বঙ্গবন্ধুর খুনিকে দেশে ফেরত পাঠানো—এসব নিয়ে স্টিফেন বিগানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে স্টিফেন বিগানের ঢাকা সফরের তাৎপর্য জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের অভাবনীয় অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা, স্থিতিশীলতা, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান—এসব কারণ মিলিয়ে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে জোর দিচ্ছে।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে স্টিফেন বিগান বলেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিষ্ঠায় তারা এই সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহী। এই অঞ্চলে তাদের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে থাকবে বাংলাদেশ।

সফররত মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই ঘণ্টায় আমাদের অনেক বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্টিফেন বিগান। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। শুধু ওই জনগোষ্ঠীকে সহায়তাই নয়, বাংলাদেশ ও এ দেশের জনগণকে যাতে তার বোঝা টানতে না হয়, সে জন্য সমস্যার উৎসে গিয়ে একটি স্থায়ী সমাধান কীভাবে করা যায়, এই লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এই সংকটে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এই সমস্যা সমাধানের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে।’

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্টিফেন বিগান বলেন, ‘এটি একটি আইনি বিষয়। আর এটা পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আওতায় নয়। আমাদের সংশ্লিষ্ট আইনি সংস্থাগুলো বিষয়টি দেখছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে আমার কথাও হয়েছে। এটি যে পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে, সেটিও তাকে জানিয়েছি।’

সফররত ডেপুটি সেক্রেটারি বিগান  বুধবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকা এসেছেন এবং শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।

আরও পড়ুন: ঢাকায় আসছেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like