Home সারাদেশ কবর দেয়ার ২০ বছর পরও অক্ষত লাশ উদ্ধার

কবর দেয়ার ২০ বছর পরও অক্ষত লাশ উদ্ধার

by Amir Shohel
অক্ষত লাশ উদ্ধার

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভাটারাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মো. মোজাফফর আলী হাওলাদার। ২০০০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৫ বছর। পরে তাকে ভাটারাকান্দা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল।

০১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ২০ বছর আগে দাফন করা মোজাফফর আলীর মরদেহ অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মরদেহ এবং কাফনের কাপড়ও ছিল অক্ষত। মঙ্গলবার বিকেলে পুনরায় ওই মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে মোজাফফর আলীর বড় ছেলে আবুল বাশার বাদশা বলেন, ভাটারাকান্দা গ্রামটি বিষখালী নদী তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যায় আমাদের ঘরবাড়ি। একই সঙ্গে ভাঙনের কবলে পড়ে বাবার কবরটিও। পরে বৈদারাপুর গ্রামে আমরা বাড়ি তৈরি করি। এরই মধ্যে ছোট ভাই বাদল কুয়েত মেডিকেল কোরে কর্মরত অবস্থায় একাধিকবার বাবার কবর বিলীন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বপ্ন দেখে। পরে আমাকে বিষয়টি জানায় বাদল। সোমবার রাতে আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে বাবার কবর স্থানান্তরের জন্য পারিবারিকভাবে আলোচনা করা হয়।

পরিবারের সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাবার কবর স্থানান্তরের জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে প্রতিবেশী সাইফুলকে নিয়ে কবরের কাছে যাই। কবর খুঁড়তেই সাদা কাপড় দেখতে পাই আমরা। একপর্যায়ে অক্ষত মরদেহ দেখে ভয় পেয়ে যাই। পরে মরদেহ বৈদারাপুর গ্রামের নতুন বাড়ি নেয়া হয়। ২০ বছর পরও বাবার মরদেহ অক্ষত দেখে সবাই হতভম্ব হন।

এদিকে ২০ বছরে মরদেহ কবরে অক্ষত থাকার খবর শুনে ওই বাড়িতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। শুধু এলাকাবাসী নয়, দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে দেখতে আসেন মরদেহ।

বাদশা আরও বলেন, আমার বাবা সাধারণ মুসল্লি ছিলেন। অনেক পরহেজগার ছিলেন তিনি। মরদেহ কবর থেকে তোলার পর দেখি কাফনের কাপড়ও পচেনি। ধরে দেখি কাপড়ের ভেতরে শুকনো দেহ রয়েছে। প্রতিটি হাড়ের জোড়া শক্ত। হাত-পায়ের জোড়া বিচ্ছিন্ন হয়নি। সকালে উদ্ধারকাজ শেষ করে বৈদারাপুর গ্রামের নতুন বাড়িতে নেয়া হয় মরদেহ। নতুন বাড়ির পাশেই আমার মায়ের কবর। তার কবরের পাশে মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে তাকে পুনরায় দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাকির হোসেন বলেন, ভাটারাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর আলীর মরদেহ অলৌকিকভাবে ২০ বছর পর অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্মীয় রীতি মেনে মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে বৈদারাপুরের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব ও কুতুবনগর আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল মান্নান বলেন, আল্লাহ নানাভাবে তার কুদরতের নিদর্শন দেখান। হয়তো এটি আল্লাহর একটি নিদর্শন। এমনও হতে পারে মোজাফফর আলী আল্লাহর গ্রহণযোগ্য বান্দা ছিলেন। তাই অলৌকিকভাবে মরদেহ অক্ষত রয়েছে। এ ধরনের মরদেহের গোসল ও জানাজা দেয়ার প্রয়োজন নেই। ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী স্থানান্তর করে দাফন করে দিলেই হয়।

ওডি/এএস

You may also like