পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অপরিকল্পিত উন্নয়নে জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে জনদুর্ভোগ বেড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যোগাযোগের রাস্তা নেই, কিন্তু নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজ।
কোথাও প্রয়োজন না থাকলেও অনেক জায়গায় ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। আবার কোথাও ব্রিজ নির্মাণ করলেও নেই সংযোগ সড়ক। ব্রিজের সঙ্গে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয় স্থানীয়দের।
এমন নানা অসংগতি, অপ্রয়োজনীয় আর অপরিকল্পিত ব্রিজের দেখা মিললো পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। যে ব্রিজগুলো উপকারের পরিবর্তে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে এলাকাবাসীর। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব ব্রিজ নির্মাণের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের সোনাহারপাড়া গ্রামের খলিশাগাড়ি বিল। গ্রাম থেকে এ বিলে যাতায়াতের রাস্তা নেই বললেই চলে। অথচ বিলের শেষ মাথায় কোনো প্রয়োজন না থাকলেও নির্মাণ করা হয়েছে একটি ব্রিজ। ব্রিজের উত্তরপাশে নেই যাওয়ার কোনো রাস্তা বা কোনো গ্রাম।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অধীনে অপ্রয়োজনীয় এই ব্রিজটি নির্মাণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩২ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
গ্রামে ও বিলে যাতায়াতের জন্যে প্রয়োজন রাস্তার। কিন্তু সেই রাস্তার পরিবর্তে ব্রিজ করে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। ব্রিজটি মানুষের কোনো উপকারেই আসছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের সিংগা খালের ওপর ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে একটি ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ কোনো উপকারে আসছে না অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় এই ব্রিজটি। কারণ ব্রিজের আশপাশে নেই যাতায়াতের ভাল রাস্তা। নদীর পাড়ে খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণের যৌক্তিকতা খুঁজে পায়নি স্থানীয়রা।
অপরদিকে নিমাইচড়া গ্রামে ব্রিজ নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়কের বেহাল দশায় কষ্ট বেড়েছে মানুষের। উঁচু খাড়া ব্রিজে উঠতে নামতে নাভিশ্বাস বয়স্ক ও শিশুদের। এসব ব্রিজ উপকারের পরিবর্তে উল্টো দুর্ভোগ বাড়িয়েছে এলাকাবাসীর।
এসব ব্রিজ নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী বাঁধাকে তোয়াক্কা করেনি ঠিকাদাররা। ঠিকাদারের সঙ্গে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এসব অপ্রয়োজনীয় ব্রিজ নির্মাণ করে সরকারি অর্থ লুটপাটের মহাউৎস চলিয়েছে বলে জানায় স্থানীয়দের।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামীম এহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সৈকত ইসলাম বলছেন, অপ্রয়োজনীয় ব্রিজের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেসব ব্রিজের রাস্তা নেই, সেগুলো রাস্তা করে না দেয়া পর্যন্ত ঠিকাদারের বিল দেয়া হচ্ছে না বলে জানান ইউএনও।
আরও পড়ুন : চাটমোহর পৌরসভায় লড়াই হবে সাখো-আরশেদের
ভয়েস টিভি/এমএইচ