বিদেশে পলাতক রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
১৩ জানুয়ারি বুধবার দুপুরের দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল অবন্তিকাকে গ্রেফতার করে।
দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, পি কে হালদারের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলার তদন্তে অবন্তিকা বড়ালের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এই কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অবন্তিকাকে গ্রেফতারের পর প্রথমে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে বেলা ২টার দিকে তাকে নিয়ে আদালতের পথে রওনা হন তদন্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অবন্তিকা বলেন, কেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে ‘কিছুই জানেন না’ তিনি।
অবৈধ সম্পদ আছে কিনা, এ প্রশ্নের উত্তরে অবন্তিকা বলেন, এটা দুদক জানে, আমি বলতে পারব না।
মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলে অবন্তিকা বড়াল দুদকে যাননি।
মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক ‘সহযোগী’ শংখ ব্যাপারীকে গ্রেফতার করা হয়।
শংখ ব্যাপারীর নামে ধানমণ্ডি এলাকায় একটি ‘বিলাসবহুল’ ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পি কে হালদারের টাকায় কেনা বলে দুদকের ভাষ্য।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা করে। ওই মামলার তদন্তে অবন্তিকা বড়ালের সম্পৃক্ততা পায় দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, পি কে হালদারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তার বান্ধবীদের অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠানে অর্থ রেখে অনেকে হয়রানি ও ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। ভুক্তভোগীরা তার (খুরশীদ আলম খান) চেম্বারে গিয়ে দেখা করে কথা বলেছেন। পি কে হালদারের অনেক বান্ধবী থাকা ও তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা রাখার তথ্য মূলত ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এ বছরের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল। এর আগে ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা যাতে বিদেশ না যেতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি তদন্তের প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুসারে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি এখন পলাতক।
ভয়েস টিভি/এসএফ