Home বিনোদন বাংলালিংকের বিরুদ্ধে জেমসের মামলা

বাংলালিংকের বিরুদ্ধে জেমসের মামলা

by Mesbah Mukul

অনুমতি ছাড়া ১৪ বছর যাবত ওয়েলকাম টিউন হিসেবে ব্যবহার করায় কপিরাইট আইনে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নগরবাউল ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল মাহফুজ আনাম জেমস।

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে তিনি এ মামলা করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন মাহফুজ আনাম জেমস আদালতে উপস্থিত হন। এছাড়া মাইলস ব্যান্ডের পক্ষে পক্ষে আদালতে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ দুইজন উপস্থিত ছিলেন।

তাপস কুমার পাল বলেন, ‘জেমস বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। তার অসংখ্য জনপ্রিয় গান আছে। তার কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই জেমসের গান বাংলালিংক তাদের ওয়েলকাম টিউন, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আসছে। বাংলালিংকের এই কর্মকাণ্ড কপিরাইট আইন ভঙ্গের সামিল। এ কারণে তিনি মামলা করতে আদালতে আবেদন করেছেন।’

জানা যায়, জেমসের অনুমতি ছাড়া তার গান নিজেদের নামে কপিরাইট করে রেখেছে বাংলালিংক। এ বিষয়ে জানার পর জেমস আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন ১৯ সেপ্টেম্বর।

এর আগে সেপ্টেম্বরের এদিন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল বলেছিলেন, ‘জেমস আদালতে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনে মামলার আবেদন করেন। শুনানিতে বিচারক গুলশান থানায় গিয়ে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। তবে থানায় মামলা না নিলে আদালতে আসতে বলেন।’

এরপর জেমস আজ বুধবার আদালতে গিয়ে মামলা দায়েরের আবেদন করেন, আদালত এই মামলা গ্রহণ করেন।

যেভাবে আজকের জেমস

আশির দশকের শুরুতে চট্টগ্রামে সঙ্গীত জীবন শুরু জেমসের। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন জেমস। সাথে ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। প্রকাশ করে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। প্রথম অ্যালবাম দিয়ে সেই সময় স্পটলাইটে চলে আসে ব্যান্ড দলটি।

১৯৮৭ সালে প্রথম একক অ্যালবাম নিয়ে প্রকাশ পায় ‘অনন্যা’। এই অ্যালবামে আসিফ ইকবালের লেখা প্রতিটি গানে যেনো নতুন এক জেমসের জন্ম হয়। আশির দশকের শেষে শুরু হয় তারকা জেমসের যাত্রা। ১৯৯৩ সালে প্রকাশ হয় ‘জেল থেকে বলছি’। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকায় জেমসের ক্যারিয়ার থেকে ‘ফ্লপ’ শব্দটি একেবারে হারিয়ে যায়।

‘ফিলিংস’ থেকে জেমস আরো ৩টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামগুলো ‘নগর বাউল’, ‘লেইস ফিতা লেইস’ ও ‘কালেকশন অব ফিলিংস’। প্রতিটি অ্যালবাম সুপার হিট। এরমধ্যে প্রকাশ পায় জেমসের আরো ৩টি একক অ্যালবাম। সেগুলো ‘পালাবো কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’ ও ‘ঠিক আছে বন্ধু’।

ব্যান্ড সঙ্গীত নিয়ে বিতর্কিত ধারণা কমতে থাকে নব্বই দশকে। জেমসের ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’র টাইটেল গানটি জেমসের একক জনপ্রিয়তাকে শীর্ষে নিয়ে যায়। ‘কালেকশন অব ফিলিংস’-এর পর জেমস গড়েন নতুন ব্যান্ড। নাম ‘নগর বাউল’। কিন্তু ‘ফিলিংস’ ছেড়ে দেওয়ার পর জেমস মনযোগী হোন একক ক্যারিয়ারে। ‘নগর বাউল’ থেকে প্রকাশ পায় মাত্র ২টি অ্যালবাম ‘দুষ্টু ছেলের দল’ ও ‘বিজলি’।

বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বলিউডেও জনপ্রিয় জেমস। ২০০৫ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমার ‘ভিগি ভিগি’ দিয়ে বলিউড ক্যারিয়ার শুরু। এরপর ২০০৬ সালে ‘চাল চালে’, ২০০৭ সালে ‘আলবিদা’ ও ২০১৩ সালে প্রকাশ প্রায় ‘বেবাসি’ গানগুলো।

ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনতে চান না তিনি। তাই তাদের সম্পর্কে ভক্তদের জানাশোনাও কম। জেমসের স্ত্রী বেনজির সাজ্জাদ। তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে দানেশ। দুই মেয়ে জান্নাত ও জাহান।

সাম্প্রতিক সময়ে জেমসের নতুন গান প্রকাশের সংখ্যা খুবই কম। তবে পুরনো গানেই ভক্তদের মনে এখনও সমান দোলা দেন তিনি। জেমসের গানের সুরক্ষায় সমর্থন জানাচ্ছেন অনুরাগী ভক্তরাও।

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like