Home সারাদেশ ফরিদপুরে ছাত্রী ধর্ষণ: সম্মানহানির ভয়ে ধামাচাপার চেষ্টা আপন চাচার

ফরিদপুরে ছাত্রী ধর্ষণ: সম্মানহানির ভয়ে ধামাচাপার চেষ্টা আপন চাচার

by Shohag Ferdaus
ধর্ষণ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর আপন চাচা আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী তাই বিষয়টি নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ না করে মিমাংসা করার চেষ্টা করছেন তিনি। আর এতেই ফুঁসে উঠেছে গ্রামবাসী।

স্থানীয়রা জানান, ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার বিচার বা মামলা না হলে ধর্ষিতার পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে। এমন পরিস্থিতিতে ধর্ষিতা ও তার মা বাড়িতে তালা মেরে উধাও হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নে। ওই ছাত্রীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের আমোরদী গ্রামের আবু দাউদ দুলালের ছেলে সোহাগ হোসেনের (১৮) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ৭ জানুয়ারি রাতে ওই ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আমোরদী গ্রামের একটি বাগানের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করে।

বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা জানার পর শুক্রবার সকালে ওই ছাত্রীকে নিয়ে তার মা সালথা থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর আপন চাচা আমির হোসেন মৃধা ফোন করে তাদের থানা থেকে ফিরিয়ে আনে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী আমির হোসেন মৃধা। তাই ভাতিজির ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করে এলাকায় পরিবেশ খারাপ করতে চাচ্ছে না। চাচার ধারণা ভাতিজির এই ঘটনা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে বদনাম হবে। এতে তার নির্বাচনেরও ক্ষতি হবে। তাই তিনি গোপনে ধর্ষকের পারিবারের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ওই ছাত্রীর ধর্ষণের বিষয়টি এলাকার সবাই জেনে গেছে। বিষয়টি ধর্ষিতার চাচা গোপন করতে চাচ্ছেন। এটা আমাদের এলাকার ইজ্জতের ব্যাপার। এ ঘটনার বিচার বা মামলা না হলে আমরা ধর্ষিতার পরিবারকে বয়কট করব। পাশাপাশি আগামী ঈদে ঈদগাহ মাঠে তাদের নামাজ পড়তে বাধা দিব।

এ ব্যাপারে ওই ছাত্রীর চাচা আমির হোসেন মৃধা বলেন, আমরা বিষয়টি পরে শুনেছি। ভাতিজি ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ঘটনা সত্য। তবে আমার ভাই জেলা সদরের একটি দফতরের বড় কর্মকর্তা। তিনি এ ঘটনায় মামলা না করার পরামর্শ দিয়েছেন এবং আমার ওই ভাতিজি ও ভাবিকে তার বাসায় নিয়ে রেখেছেন। আসলে বদনাম হবে বলে আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনি সহায়তা নেইনি।

সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বলেন, ওই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা জানার পর সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে এস আই আব্দুল্লাহ্ আজিজকে পাঠিয়েছিলাম। ধর্ষিতার পরিবার কোনো অভিযোগ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তারা অভিযোগ না করলে আমরা কি করতে পারি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সালথা থানার এস আই আব্দুল্লাহ্ আজিজ বলেন, আমি ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওই ছাত্রী ও তার মা বাড়িতে ছিল না। ওই ছাত্রীর বাবাও দেশের বাইরে থাকে। চাচাদের এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছেন। তবে এলাকার লোকজন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ গ্রেফতার

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like