Home সারাদেশ আওয়ামী লীগ-জাসদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত আলমডাঙ্গা

আওয়ামী লীগ-জাসদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত আলমডাঙ্গা

by Shohag Ferdaus
আলমডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচন সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ১১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী হাসান কাদির গনু ও জাসদের এম সবেদ আলির সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে ৩ জন আহত হয়েছে।

এ সময় দুই দলের ৬টি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলা চালানো হয়েছে এক ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতেও।

ঘটনার পর গোটা আলমডাঙ্গা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের বিভিন্নস্থানে আওয়ামী লীগ-জাসদের নেতাকর্মীদের মুখোমুখি অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

বড় সংঘর্ষের আশঙ্কায় আলমডাঙ্গা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাত ২টায় এই রির্পোট লেখা পর্যন্ত দুই পক্ষই থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের ২০/৩০ জন কর্মী আলমডাঙ্গা শহরের কলেজ পাড়া ও হাউসপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাসদ নেতা এম সবেদ আলির নির্বাচনী অফিসে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় অফিসের আসবাবপত্র। এ সময় জাসদ নেতা নজরুল ইসলামের একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।

এ সংবাদ শহরে ছড়িয়ে পড়লে ফুঁসে ওঠে জাসদের নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাসদের কয়েক শ কর্মী লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শহরের চাতালমোড়ের আওয়ামী লীগের প্রধান নির্বাচনী অফিসে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় অফিসের আসবাবপত্র।

এ সময় পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয় নৌকা প্রতীকের সমর্থক এরশাদপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রশিদ, জিন্নাহ আলীর ছেলে শাহীন ও জামিলের ছেলে বিপ্লবকে।

এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জাসদ নেতাকর্মীরা আলমডাঙ্গা শহরের কলেজ পাড়া ও শেফা ক্লিনিকের পাশে নৌকার আরও দুটি নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।

সবশেষ রাত ১১টার দিকে পৌর শহরের গোবিন্দপুর হরিতলায় নৌকার নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর চালায় তারা।

এসময় জাসদের নেতাকর্মিরা শহরের কলেজ পাড়ার ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ মিডেলের বাড়িতেও হামলা চালায়। বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফটকে কুপিয়ে বাড়ির ভিতরেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে কয়েকটি স্থানে বাধানুবাদেও জড়িয়ে পড়ে জাসদ নেতা এম সবেদ আলীর সমর্থকরা। পরে পুলিশ সদস্যদের মারমুখী অবস্থানের কারণে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় জাসদের কর্মীরা।

আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাসান কাদির গনু জানান, জাসদ নেতাকর্মীরা শহরে তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি দাবি করেন, তারা নৌকার ৪টি অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। আমার তিন কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছে। তারা এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে নিজেদের অফিসে নিজেরা হামলা করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত করছে জাসদ।

তিনি বলেন, হামলার সমুচিত জবাব আমরাও দিতে পারি, তবে আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। জাসদ প্রার্থীর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমাদের নিরব থাকাকে দুর্বলতা ভাবলে বোকার স্বর্গে বাস করবে তারা।

জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী অভিযোগ করে জানান, পরিকল্পিতভাবে শান্ত আলমডাঙ্গাকে অশান্ত করার পায়তারা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, দফায় দফায় নৌকার সমর্থকরা আমার নির্বাচনী অফিসে হামলা চালাবে, ভাঙচুর করবে আর আমরা তা ঘরে বসে বসে দেখব, এমনটি হবে না। হামলা হলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। প্রয়োজনে বাঁশের লাঠি নিয়ে আমার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাস্তায় নামবে।

এদিকে রাত ২টায় এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত দুই পক্ষের নেতাকর্মীরাই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। থানায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like