Home রাজনীতি দীর্ঘ ১৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে কোটচাঁদপুর আ.লীগের সম্মেলন

দীর্ঘ ১৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে কোটচাঁদপুর আ.লীগের সম্মেলন

by Roman Kabir

দীর্ঘ ১৮ বছর পর ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে তৃলমূল নেতাকর্মীদের দাবির মুখে আগামী ১৯ মার্চ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে তিন বছরের কমিটির কর্মকান্ড চলেছে ১৮ বছর। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

তৃণমুল নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন দলের জন্য নিবেদিত ত্যাগী যোগ্য নতুন নেতৃত্ব দলের দায়িত্বে আসুক। যাদের কারনে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সম্মেলন হচ্ছেনা। একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা সেই বর্তমান নেতাদের পরিবর্তন হোক।

বিশেষ করে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী ১৮ বছর দায়িত্ব থাকার পর আবারও প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নেতাকর্মীদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ তার বিরুদ্ধে, ১৮ বছর ধরে অসংখ্য অনিয়ম-দুর্নীতি, টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি, আন্ডার গ্রাউন্ড ও সীমান্তবর্তী এলাকার চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, হামলা-মামলা, এলাকার খুন-খারাপীর সঙ্গে জড়িতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে বলছে স্থানীয় সূত্রগুলো।

২০০৪ সালের ৪ আগস্ট কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন কালু যশোরের প্রতিথযশা সাংবাদিক শামসুর রহমান হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় প্রার্থী হতে পারেননি।

ফলে, নাসির উদ্দিন কালুর স্ত্রী মিকিকে সভাপতি এবং কালুর দুর সম্পর্কে ভাগ্নে শাজাহান আলীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

দলীয় দায়িত্বে না থাকলেও স্ত্রীকে সভাপতি করে পিছন থেকে দল পরিচালনা করতেন কালু। এরপর ২০০৯ সালে নাসির উদ্দিন কালুর মৃত্যুর পর সভাপতি মিকিকে সভাপতি করে রেখে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারি হন, সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী।

জানা গেছে, গত ১৮ বছরে উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়ন চলছে সম্মেলন ছাড়া। ফলে, ভেঙ্গে পড়েছে সাংগঠনিক অবস্থা। পাশাপাশি শাহাজান আলীর ব্যাক্তিগত অবস্থান ও জনপ্রিয়তাও প্রায় শুন্যের কোঠায়। তার প্রমান, গত পৌর নির্বাচন। ওই নির্বাচনে তিনি দলিয় প্রতীক নিয়েও চতুর্থ হন এবং জামানত হারান। শুধু তাই নয় তার মামা এবং চাচা শ্বশুরসহ অন্যান্য আত্বীয়-স্বজন যারা বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচন করেছেন, সবাই পরাজিত হয়েছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম, শেখ মোঃ খালিদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম চুন্নু, কোটচাঁদপুর পৌর আলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর, কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুন্নেছা মিকিসহ অনেক নেতার সঙ্গে কথা হয়। তাদের দাবি এসব অপকর্ম এবং একনায়কতন্ত্র রোধ করতে হলে, সম্মেলনে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে ১৭ নভেম্বর যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এম এম জামান মিল্লাত সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও পথসভা শেষে, উপজেলা শহরে ফিরছিলেন। এ সময় তাদের গাড়ি বহর কুশোগাড়ি মাঠের মধ্যে পৌছালে, রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে পথ রোধ করে উপজেলা সেক্রেটারী শাহাজান আলীর চাচা শ্বশুর কাবিলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা।

এসময় মিল্লাতের গাড়িবহরে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা হামলা ও গুলি চালায়। তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে মিল্লাতসহ সফর সঙ্গীরা প্রাণে বাঁচলেও অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় হওয়া মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

সম্মেলন ও বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে অভিযুক্ত কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী জানান, ২০০৪ সালে কমিটি হলেও অনুমোদন দেয়া হয় অনেক পড়ে। এই কারণে এতোদিন সম্মেলন হয়নি। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

শাহজাহান আলী দাবি করেন, তিনি সবসময়ই নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকেন। পৌরসভাসহ অন্যান্য নির্বাচনে তার নিজের এবং তার অনুসারীদের পরাজয়কে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।

ভয়েসটিভি/আরকে

You may also like