ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবক তায়িব (১৮)। তার পৈতৃক বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর গ্রামে। তবে কাপাসিয়ায় গ্রামের বাড়িতে তাদের কেউ বসবাস করেন না।
যুদ্ধে অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তায়িবের বাবা আয়ুবুর রহমান ওরফে মোহাম্মদ হাবিব।
১ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউক্রেন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গাজীপুরের সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন তায়িবের বাবা আয়ুবুর রহমান ওরফে মোহাম্মদ হাবিব।
তায়িবের বাবা মোহাম্মদ হাবিব ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বরে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন। ওখানেই স্থানীয় এক নারীকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে মোহাম্মদ তায়িব, মোহাম্মদ কারিম নামের দুজন সন্তানের জন্ম হয়। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের নিপ্রুস্কি জেলায় ত্রিশ বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি। সেখানে কাপড়ের ব্যবসা করেন।
তায়িবের বাবা মোহাম্মদ হাবিব বলেন, আমার বড় ছেলে ১৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ তায়িব ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেছে। তায়িব ওই শহরের কিয়েভেস্কি টেকনি ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। রাশিয়া যেদিন ইউক্রেনে অ্যাটাক করেছে, ওরা অনলাইনে খবর দেখেছে অ্যাটাকের খবর। রাশিয়া বোম্বিং শুরু করেছে ওইদিন সকালেই সে যুদ্ধে চলে গেছে।
যাওয়ার সময় তায়িব তার বাবাকে বলেছেন, ‘আমাদের দেশ ধ্বংস করে ফেলছে, আমাদের দেশে রাশিয়ার শত্রু ঢুকছে, আমি আর ঘরে বসে থাকব না, আমি অস্ত্র ধরব, আমি এই দেশের নাগরিক, এটা আমার নৈতিক কর্তব্য। আমি আমার দায়িত্ব পালন করব। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।’
তায়িবের বাবা মোহাম্মদ হাবিব আরও বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী মিলে তাকে অনেক বারণ করেছি। কিন্তু সে আমাদের কথা মানেনি।
যাওয়ার সময় তায়িব আরও বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে বারণ করো না। তোমরা আমাকে দোয়া করো। এই মুহূর্তে আমি আর ঘরে বসে থাকতে পারবা না। কারণ আমার এটা কর্তব্য এবং দায়িত্ব। আমার ওপর এটা ফরজ হয়ে গেছে দেশ শত্রু মুক্ত করার জন্য। আমি যখন বাড়িতে আসব, তখন আমি বীরের বেশে আসব।’
তায়িবের বাবা মোহাম্মদ হাবিব জানান, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ লাগছে, রাশিয়া তো মহাশক্তিশালী দেশ। ওরা ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো দখল করে নিচ্ছে, মানুষগুলো মেরে ফেলছে, সমস্ত বসত বাড়ি ধ্বংস করে দিচ্ছে। সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করে দিচ্ছে। কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে, অনেক শিশু বাচ্চা নারী-পুরুষ সবাই মারা যাচ্ছে। বাড়ির ঘর বোমাবর্ষণ করে, রকেট মেরে সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই দেশের একটা কিয়ামত হয়ে যাচ্ছে।
যুদ্ধে যাওয়ার পর তায়িব টেলিফোন করেছে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন অ্যাটাকে থাকে তখন আর ফোন ধরে না। তখন ফোন সব বন্ধ থাকে। মাঝে মধ্যে যখন খাবার দাবার ও বিশ্রামের সময় পায় তখন সে ফোন করে দুই চার মিনিট কথা বলে। তিনি তার ছেলের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
ভয়েসটিভি/আরকে