Home ভিডিও সংবাদ ঐতিহাসিক ইটাকুমারী জমিদার বাড়ি

ঐতিহাসিক ইটাকুমারী জমিদার বাড়ি

by Amir Shohel

সুপ্রাচীনকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জনপদ রংপুরের রয়েছে গৌরবময় ও বৈচিত্রপূর্ণ ইতিহাস। কালের সাক্ষী হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন। তার মধ্যে অন্যতম জেলার পীরগাছা উপজেলার ঐতিহাসিক ইটাকুমারী জমিদার বাড়ি।

পীরগাছা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে ইটাকুমারী ঐতিহাসিক শিব চন্দ্রের বাড়ি। সম্রাট আকবরের সময়ে এ বাড়িটি তার মেয়ে ফতেমার নাম অনুসারে ফতেপুর স্টেট নামকরণ করেন। পরবর্তীতে এর নাম হয় ইটাকুমারী রাজবাড়ী ।

এই জমিদার বাড়ি থেকেই সূচনা হয় ঐতিহাসিক প্রজা বিদ্রোহের। প্রজা বিদ্রোহের নেতা জমিদার শিব চন্দ্র রায়ের ইটাকুমারী জমিদার বাড়িটি যুগ যুগ ধরে প্রাচীন পুরাকীর্তির অন্যতম নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। ঐতিহাসিক এই বাড়িটি এখনো ইতিহাসের জৌলুস ছড়াচ্ছে। সবুজ ঘাস আর গাছে ঘেরা এই বাড়িটি নতুন প্রজন্মকে জানাচ্ছে পুরনো ইতিহাস।

১৭৮৩ সালে রংপুরের ঐতিহাসিক প্রজা বিদ্রোহ ইটাকুমারী রাজা শীব চন্দ্রের বাড়ী থেকে সংঘটিত হয়েছিল। শীব চন্দ্র ও দেবী চৌধুরানী প্রজা বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়ে দেবী সিংহের অত্যাচার থেকে রংপুরের কৃষক প্রজাদের রক্ষা করেছিলেন। এই বিদ্রোহ রংপুর ও দিনাজপুরে ছড়িয়ে পড়লে পীরগাছা নাপাই চন্ডির মেলা প্রান্তরে ইংরেজ বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন রাজা শিব চন্দ্ররায়, দেবী চৌধুরানী এবং দেবী চৌধুরানীর ছোট ভাই কৃষ্ট কেশর চৌধুরীসহ অসংখ্য অনুগামী শীষ্য প্রজা।

তৎকালীন অবিভক্ত বাংলাদেশে দ্বিতীয় নবদ্বীপ হিসেবে ইটাকুমারীর খ্যাতি ছিল গোটা ভারত বর্ষে । ইটাকুমারী পল্লীতে বহু অধ্যাপক এবং দেশ বিদেশ থেকে আগত বহু ছাত্র অধ্যাপনা ও অধ্যায়নে নিয়োজিত ছিলেন। অধ্যাপকদের মধ্যে অগ্রণী ছিলেন পন্ডিত কুল চূড়ামনি, রুদ্রমঙ্গল। ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ জনপদ ইটাকুমারীতে জনগ্রহণ করেন মধ্য যুগের বিখ্যাত কবি শ্রী রতিরাম দাস।

তাই রংপুরের প্রজা বিদ্রোহের ইতিহাস এলাকার মানুষ আজও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। গৌরবগাথা ঐতিহাসিক স্মৃতি সংরক্ষণ এবং গ্রামাঞ্চলের অবহেলিত জনপদে ১৯৯৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক ব্যক্তির নামের সমন্বয়ে ইটাকুমারী শিবচন্দ্র রায় মহাবিদ্যালয় নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রাচীন প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন এই জমিদার বাড়িটি দেখতে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসে। নতুনদের ইতিহাস জানাতে এই জমিদার বাড়িটি সংরক্ষনের দাবি।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like