Home বিশ্ব ইথিওপিয়ায় জাতিসংঘের ১৬ কর্মী আটক

ইথিওপিয়ায় জাতিসংঘের ১৬ কর্মী আটক

by Mesbah Mukul

জাতিসংঘের অন্তত ১৬ জন কর্মী ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈশ্বিক সংস্থাটির এক মুখপাত্র।
তিগ্রাই জাতিগোষ্ঠীর মানুষজনকে নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে এমন খবরের মধ্যেই মঙ্গলবার স্টিফেন দুজারিক জাতিসংঘ কর্মীদের আটকে রাখার এ কথা জানান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

‘তাদের দ্রুত মুক্তি নিশ্চিত করতে আমরা ইথিওপিয়ার সরকারের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি,’ নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন দুজারিক।

আটক হওয়া কর্মীদের জাতিগত পরিচয় বলতে রাজি হননি জাতিসংঘের এই মুখপাত্র।

‘তারা জাতিসংঘের কর্মী, ইথিওপিয়ার নাগরিক। পরিচয়পত্রে তাদের জাতিগত পরিচয় যা-ই লেখা থাকুক না কেন তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে এমনটাই দেখতে চাই আমরা,’ বলেছেন তিনি।

রোববার ইথিওপিয়ার মানবাধিকার কমিশন বলেছিল, রাজধানীতে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুসহ তিগ্রাই জাতিগোষ্ঠীর লোকদের নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে বলে খবর পেয়েছে তারা।

কমিশনের প্রধান ডেনিয়েল বেকেলে মঙ্গলবার রয়টার্সকে বলেন, আদ্দিস আবাবায় তিগ্রাই জাতিগোষ্ঠীর শত শত লোককে গ্রেপ্তারের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

তবে ইথিওপিয়ার পুলিশ জাতিগত পরিচয় দেখে দেখে গ্রেফতারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত বিদ্রোহী তিগ্রাই বাহিনীর সমর্থকদেরই কেবল ‘টার্গেট’ করা হয়েছে, বলছে তারা।

আদ্দিস আবাবার পুলিশপ্রধান ফাসিকা ফান্তা ও ইথিওপিয়া সরকারের মুখপাত্র লেগেসে টুলু জাতিসংঘের কর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে দাবি করেছেন।

‘ইথিওপিয়ার নাগরিক ও আইন ভেঙেছে যারা তাদেরই আটক করা হয়েছে,’ বলেছেন লেগেসে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইথিওপিয়ায় জাতিসংঘের কর্মীদের গ্রেফতার সংক্রান্ত খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।

জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে হয়রানি ও আটক ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’, বলেছে তারা।

বিদ্রোহী তিগ্রাই পিপলস লিবারেশন ফোর্সের (টিপিএলএফ) রাজধানীর দিকে এগিয়ে আসার খবরে ত্রস্ত ইথিওপিয়ার সরকার গত সপ্তাহে জরুরি অবস্থা জারি করে, যা তাদেরকে আদালতের আদেশ ছাড়াই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সন্দেহভাজন সদস্য বা সহযোগী হিসেবে যে কাউকে গ্রেফতারের ক্ষমতা দিয়েছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ইথিওপিয়ার পার্লামেন্ট টিপিএলএফকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়েছিল।

পূর্ব আফ্রিকার দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাজ্য মঙ্গলবার তার নাগরিকদের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু থাকতে থাকতে ইথিওপিয়া ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব দেশটি ছাড়তে বলে।

মঙ্গলবার জাম্বিয়া জানিয়েছে, তারাও ‘জরুরি নয়’ এমন সব কর্মীকে ইথিওপিয়া থেকে সরিয়ে নিয়েছে।

সংঘাত যেন আদ্দিস আবাবা পর্যন্ত না পৌঁছায় তা নিশ্চিতে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।

আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধি হিসেবে ইথিওপিয়ায় গেছেন নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ওলুসেগুন ওবাসানজো। তার সঙ্গে টিপিএলএফের কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির মুখপাত্র গেতাচিউ রেদা।

‘সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা আছে কিনা, তিনি তা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি, হ্যাঁ আছে,’ বলেছেন তিনি।

জাতিসংঘ ইথিওপিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে তিগ্রাই অঞ্চলে মানবিক ত্রাণ সাহায্য পাঠাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে এলেও নোবেলজয়ী আবি আহমেদের সরকার তা অস্বীকার করে আসছে।

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like