Home বিশ্ব এবার চীনের টার্গেট কি দেপসাং ভ্যালি !

এবার চীনের টার্গেট কি দেপসাং ভ্যালি !

by Newsroom

ভয়েস ডেস্ক: গালওয়ান ভ্যালি, প্যাংগং লেকের পরে এবার দেপসাং ভ্যালিতেও চীন সামরিক শক্তি দিয়ে ভারতের এলাকা কব্জার চেষ্টা করতে পারে। এমন আশঙ্কা কথা জানিয়েছে কলকাতার জনপ্রিয় পত্রিকা আনন্দবাজার।

জম্মু-কাশ্মীরে সেনার ১৬ কোরের প্রাক্তন কমান্ডার, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রামেশ্বর রায় আনন্দবাজারকে বলেন, এতোদিন চীনের পক্ষে দেপসাং ভ্যালিতে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকা মুশকিল ছিল। কারণ পাহাড়ের ওপরে দৌলত বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটি থেকে ভারত ওই এলাকায় কর্তৃত্ব করে। কিন্তু এখন চীন সেনারা দেপসাং ভ্যালির দক্ষিণে, গালওয়ান ভ্যালিতে পাহাড়ের মাথায় চলে এসেছে।

ওদিকে প্যাংগং লেকের মধ্যে ঢুকে আসা ফিঙ্গার ফোর নামে পাহাড়ের মাথাতেও চীনের সেনা ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। এরপর চিন দেপসাং-এও সামরিক শক্তি বাড়াতে শুরু করবে। বাস্তবের জমিতে এর অর্থ হল, দেপসাং ভ্যালি থেকে একেবারে নীচে ডেমচক পর্যন্ত কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা চীনের রয়েছে।

পত্রিকাটি আরো বলছে, প্রাক্তন সেনা-কর্তাদের এই আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়। কারণ দেপসাং-এ ইতিমধ্যে সেনা সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছে চীন। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় সেনার সঙ্গে ট্যাঙ্ক, কামানও মোতায়েন করতে শুরু করেছে। ওই এলাকায় দ্রুত সেনা মোতায়েনের জন্য রাস্তাও তৈরি করছে চীন।

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রায়ের ব্যাখ্যা, দারবুক থেকে শিয়ক হয়ে দৌলত বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটি পর্যন্ত যে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, যা ভারতের এলাকায় হলেও চীনের মাথা ব্যথার কারণ। চীন পাহাড়ের ওপর থেকে এই রাস্তায় গতিবিধির ওপর নজরদারি করতে চায় বলেই গালওয়ান ঘাঁটির ১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার তোয়াক্কা না করে পাহাড়ের ওপরে চলে এসেছে। সেখান থেকে চীন দৌলত বেগ ওল্ডির দিকে যাওয়া রাস্তায় নজরদারি করতে পারবে। ফলে সামরিক দিক থেকে ভারতের দৌলত বেগ ওল্ডি দুর্বল হয়ে পড়ল।

দেপসাং ভ্যালিতে চীনের সেনা ২০১৩-র এপ্রিলে প্রায় তিন সপ্তাহ ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। আগস্ট মাসেই দেপসাং-এর ওপরে কর্তৃত্ব করতে বিশ্বের সর্বোচ্চ বিমানঘাঁটি দৌলত বেগ ওল্ডি চালু করে দেয় ভারত। এবার গালওয়ান বা প্যাংগং থেকে চীনের সেনাকে সরানো সহজ হবে না বলেই মনে করছেন প্রাক্তন সেনাকর্তারা। রামেশ্বর বলেন, অনেকে বলছে, চীনের সেনা শীতে সরে যাবে। কিন্তু সরে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে কংক্রিটের বাঙ্কার তৈরি করতো না। ভারতীয় জওয়ানরা শীতের সময় ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকতে পারলে, ওরা পারবে না কেন? তা হলে এখন উপায়?

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেন, যদি মনে করি, পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার উপায় নেই, তা হলে ওদের অন্তত ওখানেই আটকাতে হবে। গালওয়ান, প্যাংগং বা দেপসাং, কোথাও এগোতে দেয়া চলবে না। চীন কথা বোঝে না। সমানে সমানে শক্তি হলে তবেই গুরুত্ব দেয়। সেটাই করতে হবে।

পত্রিকাটি আরো বলছে, কর্তৃত্বের লক্ষ্যেই প্যাংগং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার-ফোর বলে চিহ্নিত পাহাড়ের মাথাতেও চীন ঘাঁটি গেড়েছে। গোটা এলাকার ভৌগোলিক খুঁটিনাটির সঙ্গে পরিচিত রামেশ্বরের বক্তব্য, চিনের সেনা প্যাংগং-এর পাহাড়ের মাথায় অন্তত ৬০টি কংক্রিটের বাঙ্কার তৈরি করে ফেলেছে। পাহাড়ের নীচে ভারতের ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ-আইটিবিপির চৌকি থাকলেও পাহাড়ের উপরে চীন ঘাঁটি গেড়ে ফেলায় ভারতের সেনা বা আইটিবিপি ফিঙ্গার-এইটের দিকে ভারতের এলাকাতেই যেতে পারছে না।

রামেশ্বর বলেন, ভারতের পক্ষে গালওয়ানে ১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট ও প্যাংগং হ্রদের ফিঙ্গার-ফোরের অন্যদিকে নিজের এলাকাতে এগোনোই মুশকিল।

You may also like