আজ ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার। ১৯২৬ সালের এই দিনে ভারতের আসামে জন্ম নেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ও বিশ্বশিল্পী খেতাব প্রাপ্ত ভূপেন হাজারিকা। জনপ্রিয়তায় আকাশচুম্বী এই কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিন আজ।
প্রয়াত সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব ভূপেন হাজারিকার পিতার নাম নীলকান্ত হাজারিকা, মায়ের নাম শান্তিপ্রিয়া হাজারিকা। পিতা-মাতার দশ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।
মাত্র ১০ বছর বয়স থেকেই গান লিখে সুর দিতেন তিনি। পরে আসামের চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের সূচনা হয় এক শিশুশিল্পী হিসেবে।
অত্যন্ত দরাজ গলার অধিকারী এই কণ্ঠশিল্পী অসমিয়া চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে গানের জগতে প্রবেশ করার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। পরবর্তীকালে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় গান গেয়ে ভারত এবং বাংলাদেশে অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
১৯৩৯ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি অসমীয়া ভাষায় নির্মিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা পরিচালিত ইন্দুমালতী সিনেমাতে ‘বিশ্ববিজয় নওজোয়ান’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছিলেন।
২৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ আঞ্চলিক চলচ্চিত্র ‘চামেলী মেমসাহেব’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
শ্রেষ্ঠ লোকসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ‘অল ইন্ডিয়া ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন’ পুরস্কার ১৯৭৯ সালে। অসম সরকারের শঙ্করদেব পুরস্কার পান ১৯৮৭ সালে। দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান ১৯৯২ সালে। জাপানে এশিয়া প্যাসিফিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রুদালী সিনেমার শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালকের পুরস্কার অর্জন।
তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই পুরস্কার পান। ১৯৯৩ সালে পান পদ্মভূষণ। ২০০১ সালে অসম রত্ন। ২০০৯ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কার।
তার গানগুলোর মধ্য, আজ জীবন খুঁজে পাবি, আমি এক যাযাবর, আমায় ভুল বুঝিস না, একটি রঙ্গীন চাদর, ও মালিক সারা জীবন, গঙ্গা আমার মা, প্রতিধ্বনি শুনি, বিস্তীর্ণ দুপারে, মানুষ মানুষের জন্যে, সাগর সঙ্গমে, হে দোলা হে দোলা, চোখ ছলছল করে ইত্যাদি খুব জনপ্রিয়।
ভূপেন হাজারিকাকে কিডনী বৈকল্যসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ২০১১ সালের ৫ই নভেম্বর ধরাধাম ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে এই গুণী শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
ভয়েস টিভি/টিআর
