Home বিশ্ব যেসব কারণে ক্ষমতা দখল করল মিয়ানমার সেনাবাহিনী

যেসব কারণে ক্ষমতা দখল করল মিয়ানমার সেনাবাহিনী

by Newsroom

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে কেন সু চিকে সরিয়ে সেনাবাহিনী নিজেরাই ক্ষমতা দখল করল? যেখানে সু চি সম্পর্কে বলা হচ্ছিল, সেনাবাহিনী সু চির নীতি গ্রহণ করেনি, সু চিই সেনাবাহিনীর নীতি গ্রহণ করে ক্ষমতায় ছিলো।

প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশি মিয়ানমার থেকে জানা,  তিনি সু চির দলের একজন নেতার ব্যাপারে খোঁজ নিতে তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু সেই নেতার ছেলে জানান যে, তার বাবাসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে তিনি কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না। ধারণা করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী তাদের আটক করেছে।

বাংলাদেশি ওই নাগরিক আরও জানান, মিয়ানমার সরকারের আদেশে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে অধিকাংশ ব্যাংকের কার্যক্রম এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছে।

তবে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল করার কয়েকটি কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইয়াঙ্গুনে দীর্ঘ এক দশক ধরে বসবাসরত বাংলাদেশি ও একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান সংবাদ্যমকে বলেন , ‘সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

প্রথমত, একটি রাজনৈতিক সরকার যদি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকে তবে সামরিক বাহিনীর গুরুত্ব কমে যেতে পারে। এরকম ধারণা করে থাকতে পারে সেনাবাহিনী।

দ্বিতীয়ত, এতে জনগণের মনে এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেতে পারে যে, এখন আর সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ নয়, রাজনীতিবিদরাই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে মিয়ানমারের সমাজ জীবনে সেনাবাহিনী তার গুরুত্ব হারাবে। এখনকার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াংয়ের অবসরের সময় হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে। অবসরে গেলে সু চির সরকার আন্তর্জাতিক আদালতে তার পক্ষে অবস্থান নাও নিতে পারে। এমন একটি আশংকা সম্ভবত তার ভেতরে তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনী ক্ষমতায় থাকলে আন্তর্জাতিক আদালতে তিনি সব রকমের সহায়তা পাবেন।

আরও পড়ুন : সেনা অভ্যুত্থানে মালির প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

তৃতীয়ত, সেনাপ্রধান মিন অং অবসরের পর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ক্ষমতায় আসতে চান বা প্রেসিডেন্ট হতে চান। সু চির রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে সেটা হওয়া কঠিন। গত নির্বাচনে সেনা সমর্থিত রাজনৈতিক দলটির ফলাফল অত্যন্ত শোচনীয় হয়েছে। নির্বাচনে ৪১২টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টি আসন পেয়েছে সু চির এনএলডি ও সেনা সমর্থিত ইউএসডিপি ৩৩টি আসন। ফলে অবসরের পর সু চির রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তিনি পারবেন না। সে কারণেই রাজনৈতিক সরকারের পরিবর্তে সামরিক সরকারকে ক্ষমতায় রেখে তিনি অবসরে যেতে চাইছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

১ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই রাজধানীতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রাস্তায় সেনা বা পুলিশের টহল নজরে পড়ছে না। রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম।

দেশটিতে ইন্টারনেটের গতি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে এসেছে। বেসরকারি মোবাইল অপারেটর সেবা বন্ধ থাকলেও চালু হয়েছে সরকারি মোবাইল অপারেটর সেবা।

মিয়ানমারের জনগণের এখন কী করণীয়, সে সম্পর্কে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like