Home সারাদেশ সাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

by Shohag Ferdaus
খালেকদাদ

বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কথাসাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরীর ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৬ অক্টোবর।

দিবসটি উপলক্ষে আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি নেত্রকোনা জেলা শাখা স্মরণসভার আয়োজন করেছে। এছাড়া জেলা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকা খালেকদাদ চৌধুরীর বাসভবনে কোরানখানি, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এই গুণী কথাসাহিত্যিক ১৯০৭ সালের এই দিনে নেত্রকোনার মদন উপজেলার চানগাঁও গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। খালেকদাদ চৌধুরী ১৯২৪ সালে নেত্রকোনার দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশের পর ১৯২৪ সালে কলকাতা রিপন কলেজ থেকে সুনামের সঙ্গে আইএ পাশ করেন। পরে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স শেষ করেন। ১৯২২ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবি বন্দে আলী মিয়া সম্পাদিত বিকাশ পত্রিকায় তার লেখা প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি কলকাতা করপোরেশনের একটি স্কুলে কিছুদিন শিক্ষকতার পর ১৯৪১ সালে তথ্য অফিসার হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।

১৯৪১ সালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত ‘দৈনিক নবযুগ’ পত্রিকার শিশু বিভাগ সম্পাদনা করেন তিনি। সেই সূত্রেই কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি পায়। ১৯৬১ সালে সরকারি চাকরি ইস্তফা দিয়ে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। সে সময় নেত্রকোনা থেকে ‘উত্তর আকাশ’ নামে মাসিক সাহিত্য পত্রিকা বের করেন। তার সম্পাদিত বহুল আলোচিত ‘উত্তর আকাশ’ সাহিত্য পত্রিকাকে কেন্দ্র করে সে সময় নেত্রকোনায় গড়ে উঠেছিল কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের মিলন মেলা। এই পত্রিকায় সাহিত্যচর্চা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, হেলাল হাফিজ, রফিক আজাদ, জীবন চৌধুরী, শান্তিময় বিশ্বাসসহ অনেক কবি সাহিত্যিক। ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটি চালু ছিল।

কোমলমতি শিশু কিশোরদের বই পড়ার অভ্যাস এবং আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে তোলেন নেত্রকোনা সাধারণ গ্রন্থাগার। সেই গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে ‘সৃজনী’ নামে আরেকটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তার লেখা ও প্রকাশিত ডজনখানেক বইয়ের মধ্যে ‘রক্তাত্ত অধ্যায়’, ‘একটি আত্মার অপমৃত্যু’, ‘এ মাটি রক্তে রাঙ্গা’, এবং শতাব্দীর দুই দিগন্ত উল্লেখযোগ্য।

তিনি বিখ্যাত ‘মরু সাহারা, ‘বাহার-ই-স্তান-ই-গায়েবী’ ও ‘ওরসে কারবালা’, ‘বেদুইনের মেয়ে’র অনুবাধক।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৩ সালে তাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে ২১ পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৫ সালের ১৬ অক্টোবর এই কৃতি সাহিত্যিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন।

সৃজনশীল সাহিত্য চর্চার বিকাশ এবং কথা সাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতেই নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ ১৪০৩ বঙ্গাব্দ থেকে পহেলা ফাল্গুন বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব ও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে আসছে। ইতোমধ্যে দেশবরেণ্য অনেক কবি সাহিত্যিক এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: বাউল মতবাদ ও আবিস্কারক রবীন্দ্রনাথ ভাবনা

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like