Home সারাদেশ শেরপুরে ওয়ানগালা উৎসবে মাতোয়ারা গারো সম্প্রদায়

শেরপুরে ওয়ানগালা উৎসবে মাতোয়ারা গারো সম্প্রদায়

by Newsroom
গারো সম্প্রদায়

গারোদের ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা  উৎসবে মাতোয়ারা হয়েছেন শেরপুরের গারো সম্প্রদায় । সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

এর আগে নতুন খাদ্যশস্য ভোজন নিষেধ থাকে এ সম্প্রদায়ের জন্যে। তাই অনেকেই একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলে থাকেন। আবার ওয়াানগালা উৎসব একশ ঢোলের উৎসব নামেও পরিচিত।

এতে ঐতিহ্যবাহী জুম নাচ, নিজ ভাষায় গান ও গারো সম্প্রদায় নাচ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মনোবাসনার নানা নিবেদন হয় এ উৎসবে।

গারো সম্প্রদায়

গারোদের বিশ্বাস, ‘মিসি সালজং’ বা শস্য দেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন। নতুন ফল ও ফসল ঘরে উঠবে। তার আগে কৃতজ্ঞতা জানাতেই হবে শস্যদেবতার প্রতি। গারো সম্প্রদায়ের এটাই রীতি। তাই শস্যদেবতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির জন্যে নেচে-গেয়ে উদযাপন করা হয় ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব। একই সঙ্গে পরিবারের ভালবাসা, মন্ডলীর আনন্দ, সব পরিবারের মঙ্গল কামনা করা হয় শস্যদেবতার কাছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে এ সম্প্রদায়ের লোকেরা উৎসব করেছে। ২২ নভেম্বর রোববার  দিনব্যাপী মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর গির্জা চত্তরে ওই উৎসবের আয়োজন করে।

সকাল নয়টায় থক্বা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার সুবল কুজুর সিএসসি। তাকে সহযোগিতা করেন সহকারী পাল পুরোহিত ফাদার আশীষ রোজারিও সিএসসি ।

গারো সম্প্রদায়

উৎসবে ক্রুশচত্বরে বাণী পাঠ (মান্দিতে), খামালকে খুথুব ও থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্কুু দেয়া, পবিত্র খ্রীষ্টযাগ, দান সংগ্রহ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রার্থনা করা হয়। গারো সম্প্রদায়ের কয়েকশ মানুষ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারোদের নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়।

মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার সুবল কুজুর সিএসসি জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর উদ্যোগে ওয়ানগালা উৎসব পালন করা হচ্ছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য।

উৎসব ঘিরে ধর্মপল্লীর পাশে গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোষাক ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে মেলা বসে।

আরও পড়ুন- করোনায় দিশেহারা ভোলার বেদে সম্প্রদায়

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like