নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় দুই মামলায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলুসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদলতে চার্জশিট দিয়েছে পিবিআই। তবে এদের মধ্যে চারজন পলাতক রয়েছে।
একই সঙ্গে ওই মামলায় গ্রেফতার রহমত উল্যা ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ১৪জনের মধ্যে ৪জন এখনো পলাতক রয়েছে।
১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, দেলোয়ার হোসেন দেলু (২৬), জামাল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামাল (৫২), নূর হোসেন বাদল (২২), আব্দুর রহিম (২০), মোহম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম (২৩), সামছুদ্দিন সুমন ওরফে কন্ট্রাক্টর সুমন (৩২), ইস্রাফিল হোসেন মিয়া (২১), মাইন উদ্দিন সাজু (২১), নূর হোসেন রাসেল (২৯), আনোয়ার হোসেন সোহাগ (২৪), আব্দুর রব চৌধুরী ওরফে লম্বা চৌধুরী (৫০), মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে আরিফ (১৯), মিজানুর রহমান ওরফে তারেক (২০) এবং মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ওরফে সোহাগ মেম্বার (৪৫)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সীর তদারকি করে।
পরবর্তীতে ধর্ষণ মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফা ও নির্যাতন মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। মামলা দুটিতে ১০জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৮জন আসামি। এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছে জামাল উদ্দিন, আব্দুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ ও মিজানুর রহমান তারেক নামের চার আসামী।
পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ১০০ নম্বর পাতায় ধর্ষণ ও ৩৩২ নম্বর পাতায় নির্যাতন মামলায় ১৪ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক উৎপল চৌধুরীর নিকট জমা দেয়া হয়েছে। পলাতক চার আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢুকেন। বিষয়টি দেখে পেলে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার।
রাত ১০টার দিকে দেলোয়ারের লোকজন ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে কুপ্রস্তাব দেয়। তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই গৃহবধূকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে এ ঘটনায় দায়েরকৃত গৃহবধূ নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফী মামলা অধিকতর তদন্তের জন্যে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন : বিবস্ত্র করে নির্যাতন: দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
ভয়েস টিভি/এমএইচ