বাবা হোটেল ব্যবসায়ীর স্বপ্ন ছিল তার মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হউক। দুইবোন ও এক ভাইয়ের মাঝে সে স্বপ্নের পথে হেটেছে মেয়ে সুমাইয়া আক্তার চাঁদনী। সাধারণের মাঝে অসাধারণ এক শিক্ষার্থী। জেএসসির পর মানবিক বিভাগ নেয়ায় অনেকে নিরুৎসাহিত করলেও চাঁদনী সফলতার সাথেই এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়ে পরিবার ও সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ‘বি’ ইউনিটে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন। চাঁদনীর স্বপ্ন একদিন সে ঢাবির শিক্ষক বা এডমিন ক্যাডার হবে।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের বাজারের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুমাইয়া আক্তার চাঁদনী। পরিবারে বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই বোন এক ভাই নিয়ে তাদের সংসার।
কোভিড-১৯ এর কারণে সারাদেশে এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি লকডাউনে থমকে যায় পুরো দেশ। পরবর্তীতে ২০২০ সালের এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফলাফল দেয়া হয়। সেখানে সে জিপিএ-৫ লাভ করে। শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি। তার প্রবল আত্মবিশ্বাস পরিবারের সকলের দেয়া উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় ভালো ফলাফলই ছিল মূল লক্ষ্য। কারণ, মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে এটাই ছিল বাবা মার চাওয়া।
চাঁদনীর ইচ্ছে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়বে। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে চাঁদনী ঢাবি- ‘বি’ ইউনিটে ১৫৮৭ তম, পাশাপাশি রাবি-‘এ’ ইউনিটে ৮৪৭তম, ‘বি’ ইউনিটে ৫০তম এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৭৩.৭৫ পেয়ে উত্তীর্ণ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষাথী সুমাইয়া আক্তার চাঁদনী ভয়েস টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমার ইচ্ছা আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক বা এডমিন ক্যাডার হতে চাই। এই সাফল্য আমার একার নয়। পরিবার, শিক্ষক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের যারা আমাকে সবসময় উৎসাহ দিয়ে, দিক নির্দেশনা দিয়ে পাশে থেকেছে। আমি তাদের কাছে চির ঋণী। আমি সবার কাছে দোয়া চাই।’
চাঁদনী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ছাত্র বন্ধুরা তোমরা নিয়মিত লেখা পড়া চালিয়ে যাও আর বিশ্বাস রাখো সফল হবে।’
চাঁদনীর বাবা চাঁদ মিয়া বলেন, আমার মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ায় আমি খুশি কিন্তু ভর্তি পরবর্তী শিক্ষা খরচ মেটাতে অনেক টাকার প্রযোজন। আমার যে হোটেল আছে তাতে এ দিয়ে তো আর হবে না। হোটেলের ভাড়া দিতে হয়। যে টুকু আয় হয় তা দিয়ে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে আছি। ভর্তি এবং মাসিক খরচের টাকায় কোথায় পাবো জানা নেই। যদি কোন ব্যক্তি সহযোগিতা করে তাহলে ভালো হয়।
ভয়েসটিভি/এমএম