১৯৯২ থেকে ১৯৯৬, মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র যাত্রা তার। এই সল্প পদচারনাতেই বাংলাদেশের সিনেমাঙ্গন এখনও সালমানমুখর। ২০২০ সালে এসেও তাকে নিয়ে আলোচনায় পড়েনি একটুও ভাঁটা।
ঢাকাই সিনেমার ‘চির আধুনিক’ নায়ক হিসেবেও তাকে অভিহিত করেন কেউ কেউ।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটে জন্ম নেয়া শাহরিয়ার চৌধুরী ইমনের যাত্রারম্ভ টেলিভিশন নাটক দিয়ে। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাটক “আকাশ ছোঁয়া’ দিয়ে যাত্রা শুরু।
এরপর দেয়াল, সব পাখি ঘরে ফেরে, সৈকতে সারস’সহ অভিনয় করেছেন আরও বেশ কিছু নাটকে। সিনেমায় আসেন খ্যাতিমান পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দ মেলা তিনটি হিন্দি ছবি ‘সনম বেওয়াফা’, ‘দিল’ ও ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ এর কপিরাইট নিয়ে সোহানুর রহমান সোহানের কাছে আসে এর যে কোন একটির বাংলা পুনঃনির্মাণ করার জন্য।
কিন্তু তিনি উক্ত ছবিগুলোর জন্য উপযুক্ত নায়ক-নায়িকা খুঁজে না পেয়ে সম্পূর্ণ নতুন মুখ দিয়ে ছবি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। নায়িকা হিসেবে মৌসুমিকে নির্বাচিত করলেও নায়ক খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
তখন নায়ক আলমগীরের সাবেক স্ত্রী খোশনুর আলমগীর ‘ইমন’ নামে একটি ছেলের সন্ধান দেন। প্রথম দেখাতেই তাকে পছন্দ করে ফেলেন পরিচালক এবং সনম বেওয়াফা ছবির জন্য প্রস্তাব দেন, কিন্তু যখন ইমন ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবির কথা জানতে পারেন তখন তিনি উক্ত ছবিতে অভিনেয়র জন্য পীড়াপীড়ি করেন।
তার কাছে কেয়ামত সে কেয়ামত তক ছবি এতই প্রিয় ছিলো যে তিনি মোট ২৬ বার ছবিটি দেখেছেন বলে পরিচালক কে জানান। শেষ পর্যন্ত পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান তাকে নিয়ে কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন এবং ইমন নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় সালমান শাহ।
সিনেমায় পা রেখে জনপ্রিয়তার সিঁড়ি ছুতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় নি তাকে। অনিন্দ্য অভিনয়ে সালমান টিভি পর্দার সামনে বসে থাকা প্রতিটি চোখেই হয়ে উঠেছিলেন এক কাঙ্খিত চরিত্র। এরপর তার হাত ধরে এসেছে একের পর এক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৬, মাত্র চার বছর ছিল তার সিনেমাযাত্রা। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইস্কাটনের বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে তার আত্মহত্যার কথা।
যদিও তা মানতে রাজী নয় সালমান শাহর মা ও তার ভক্তরা। এখনও তারা মনেপ্রাণে মানেন, আত্মহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে তাদের প্রিয় নায়ক সালমান কে।
বেঁচে থাকলে আজ পালিত হত ঢাকাই সিনেমার এই ক্ষণজন্মা ধুমকেতুর ৪৯তম জন্মদিন।
ভয়েস টিভি/টিআর