Home বিশ্ব রক্তচোষা চুপাকাবরা!

রক্তচোষা চুপাকাবরা!

by Shohag Ferdaus
চুপাকাবরা

রক্তচোষা প্রাণিদের মধ্যে অন্যতম চুপাকাবরা। এটি এমন এক ধরনের প্রাণী যা ছাগল,গরু, মহিষ, মেষ ইত্যাদি গৃহপালিত পশুর রক্ত পান করে। স্প্যানিশ ভাষায় চুপা’র মানে হচ্ছে চোষা। আর কাবরা অর্থ ছাগল। অর্থাৎ চুপাকাবরা হচ্ছে ছাগলচোষা। নামটার মধ্যেই এর অর্থ অন্তর্নিহিত।

চুপাকাবরা আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলের লোককাহিনীর একটি কিংবদন্তি প্রাণী। যা ১৯৯৫ সালে পুয়ের্তো রিকোতে এর প্রথম কল্পিত দর্শনীয় প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়। প্রাণিটির নাম বর্ণিত ভ্যাম্পিরিজম থেকে এসেছে। চুপাকাবরা ছাগলসহ পশুপালকে আক্রমণ করে এবং রক্ত পান করে। প্রাণির দৈহিক বিবরণ ভিন্ন হয়। এর আকার একটি ছোট ভালুকের মতো।

চিলির দক্ষিণে এমনকি আমেরিকার বাইরে রাশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশে এদের আস্তিত্বের খবর পাওয়া গেছে। তবে বেশিরভাগ রিপোর্টকে অসমর্থিত বা প্রমাণের অভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। বন্যজীবন পরিচালন কর্মকর্তাদের মতে চুপাকাবড়া একটি নগর কিংবদন্তি।

১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে পুয়ের্তো রিকোয় চুপাকাবরা আক্রমণ করে। আটটি মেষকে মৃত অবস্থায় শনাক্ত করা হয়, যার প্রতিটি বুকের অংশে তিনটি পাঞ্চের ক্ষত ছিল এবং রক্ত সম্পূর্ণরূপে শোষণ করা হয়েছিল।

এর কয়েক মাস পর আগস্টে মেডেলিন টোলেন্টিনো নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী ক্যানভানাসের পুয়ের্তো রিকান শহরে প্রাণিটিকে দেখতে পেয়েছিলো। সেখানে প্রায় দেড় শ খামারে প্রাণী মারা গেছে তার ধ্বংসলীলায়।

প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হয়েছিল যে হত্যাকাণ্ডটি শয়তানী সম্প্রদায়ের দ্বারা হয়েছিল,পরে দ্বীপের আশেপাশে আরও হত্যার খবর পাওয়া গেছে এবং অনেক খামারে প্রাণির প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। প্রতিটি প্রাণির শরীরে শুকনো রক্তক্ষরণ করে একের পর এক ছোট ছোট বৃত্তাকার ছিদ্র করেছিলো।

পুয়ের্তো রিকোতে প্রথম রিপোর্ট হওয়া ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যেই ডমিনিকান রিপাবলিক, আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, চিলি, কলম্বিয়া, হন্ডুরাস, এল সালভাদোর, নিকারাগুয়া, পানামা, পেরু, ব্রাজিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে প্রাণির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ডিসেম্বর ২০১৮ সালে ভারতের মণিপুরে সন্দেহভাজন চুপাকাবরার অনেকগুলো সংবাদ এসেছে।

চুপাকাবরার আক্রমণের মতো সন্দেহজনকভাবে বহু গৃহপালিত প্রাণী ও হাঁস-মুরগি মারা গিয়েছিল এবং বেশ কয়েকজন লোক জানিয়েছে তারা চুপাকাবরা দেখেছিল। তবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন যে একটি মৃতদেহের অবশিষ্টাংশ অধ্যয়ন করার পরে রাস্তার কুকুরগুলো গৃহপালিত প্রাণী ও হাঁস-মুরগির গণহত্যার জন্য দায়ী ছিল।

২০১০ সালের অক্টোবরের শেষ দিকে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী ব্যারি ও কনর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে সমস্ত চুপাকাবরা রিপোর্ট কেবল পরজীবী সারকোপটিস স্ক্যাবিয়াই দ্বারা সংক্রমিত কোয়োটস ছিল, যার লক্ষণগুলো চুপাকাবরার বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিল ছিল।

চুপাকাবরা সরীসৃপের মতো প্রাণী যার চামড়া খসখসে সবুজ-ধূসর ত্বক এবং ধারালো মেরুদণ্ড রয়েছে। এটি প্রায় ৩ থেকে ৪ ফুট ০.৯ থেকে ১.২ মিটার উঁচু হয় এবং এটি ক্যাঙ্গারুর মতো ফ্যাশনে দাঁড়িয়ে থাকে। বেশিরভাগই চুলহীন এবং এগুলোর মেরুদণ্ডের রিজ অস্বাভাবিকভাবে চোখের সামনে থেকে দেখা যায়।

চুপাকাবরাকে নিয়ে অনেক সময় অনেক অ্যাডভেঞ্চারস সিরিজ হয়েছে। এরমধ্য অন্যতম হলো জ্যাকি চ্যানের অ্যাডভেঞ্চার পর্ব ‘এল চুপাকাবরার অভিশাপ’।

আরও পড়ুন: মাড়ির রক্তপাত, সমাধান যেভাবে

ভয়েস টিভি/এমডি/এসএফ

You may also like