Home সারাদেশ আদিতমারীর সেই উপজেলা চেয়ারম্যান বরখাস্ত

আদিতমারীর সেই উপজেলা চেয়ারম্যান বরখাস্ত

by Newsroom
চেয়ারম্যান বরখাস্ত

নানা আলোচনা সমালোচনার পর লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা রিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

৩০ নভেম্বর সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব নুমেরী জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনসহ ১৮জন অফিসারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৬টি বিষয়ে অভিযুক্ত করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে গত ১২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার  আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে অসাদাচরন ও অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দের অভিযোগ ইউএনওসহ ১৮জন অফিসার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে প্রকাশ, আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিধিবিধান ও নীতিমালা লংঘন করে কাজের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে সেই দফতরের কর্মকর্তাকে অশ্রব্য ভাষায় গালমন্দসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেন চেয়ারম্যান।

আরও পড়ুন- ইউএনওকে হত্যার হুমকি দিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

১২ নভেম্বর  মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। যা বিধি সম্মত না হওয়ায় ইউএনও নাকোচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান। এরপর চেয়ারম্যান ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার ছবি তোলেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। একইসঙ্গে ক্যামেরা খুলে ফেলার কারণ জানতে চাইলে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করা হয় ‘(বেশি কথা বললে পিটিয়ে নরসিংদী পাঠিয়ে দেবো। উপজেলা পরিষদ কি তোর বাবার সম্পত্তি, উপজেলা পরিষদ কি তুই চালাবি?)’। এভাবে গালমন্দ করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ইউএনওসহ ১৮জন অফিসার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ১৬ নভেম্বর ৩৭ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায় জেলা প্রশাসন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে মঙ্গলবার(২৪ নভেম্বর) সরেজমিন তদন্ত করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূঞা।

নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ১৫ নভেম্বর রোববার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি(নং৫৫৮) করেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। একই দিন যৌথ স্বাক্ষরিত উপজেলার রাজস্ব তহবিলের ব্যাংক হিসাবের ১৯টি চেকের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন চেয়ারম্যান। যা নিয়েও আদিতমারী থানায় জিডি(নং ৫৫৯) করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্টানোটাইপিস্ট হাবিবুর রহমান।

আরও পড়ুন- ইউএনও’র অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রনালয়ে

একই ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ইউএনও’র বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস। ইউএনওসহ অফিসারদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান দাবি করেন। এসময় উল্টো ইউএনওর অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানান তিনি। ঘটনার পর থেকে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এছাড়াও ৯ দফা অভিযোগ তুলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের প্রতি অনাস্থার প্রস্তাব তুলে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন উপজেলার ৮জন ইউপি চেয়ারম্যান।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

 

You may also like