Home জাতীয় করোনা সংকটে রাজধানীতে চোর ও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব

করোনা সংকটে রাজধানীতে চোর ও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব

by Newsroom

করোনা সংকটে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে চোর ও ছিনতাইকারীর উপদ্রব বেড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে পুলিশ বলছে চুরি-ছিনতাই আগের চেয়ে অনেক কমেছে।

জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে সাধারণত রাতে পুরো ঢাকায় নীরবতা নেমে আসে। রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিও কিছুটা ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। এরই সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তরা সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত নিরিবিলি সড়ক, ফ্লাইওভার, লঞ্চ ও বাস টার্মিনালের আশপাশের এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি করে বেড়ায়।

এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানার বৌ-বাজার মোড়ে প্রাইভেট কার যোগে এসে চার ছিনতাইকারী এক বিকাশ এজেন্টকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আট লাখ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ সবকিছু নিয়ে যায়। আশেপাশের লোকজন আহত বিকাশ এজেন্টকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল এবং পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন ১৩ সেপ্টেম্বর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

কয়েকদিন পর গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে। ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বীকার করে আটককৃতরা জানায়, দীর্ঘদিন থেকে আশুলিয়া, বসিলা, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া ও শেরেবাংলা নগর ও বিভিন্ন টার্মিনালে ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত তারা।

করোনা সংকট শুরু হলে লকডাউনের মধ্যেই গত ২ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিল্লাহ ফার্মেসি ও খিলগাঁওয়ের লাজফার্মায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়ও মোহাম্মদপুর ও খিলগাঁও থানায় মামলা হয়। পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।

এছাড়া বিভিন্ন বাসা-বাড়ির জানালা, গ্রিল ও ভেন্টিলেটর কেটে চুরির সংখ্যা বেড়েছে। শ্যাওড়াপাড়ায় বাসা-বাড়ি থেকে মোবাইল টান দেওয়া, কাপড় চুরির মত ঘটনাও বেড়েছে। চোরের উৎপাতের কারণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের লালমাটিয়া এলাকায় নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটির সেক্রেটারি আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন দুলাল বলেন, এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সোসাইটির পক্ষ থেকে একসময় জোরালো অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কমিটি বিলুপ্ত না হলেও বর্তমানে নানা কারণে এর কার্যক্রম অনেকটা স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তবে এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধে কমিশনারের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যতদূর সম্ভব তারাও সহযোগিতা করছেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে চোর চক্রের ৮জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় পকেট থেকে ও বিভিন্ন বাসা বাড়ির জানালা দিয়ে মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির কাজে জড়িত ছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।

গত ১২ এপ্রিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। একসময় কাওরান বাজার এলাকায় তারা সবজি চুরি করতো। পরে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গের জড়িয়ে পড়ে। বাড্ডা, রামপুরা, কালশি, বেড়িবাঁধ, আদাবর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, তুরাগ, রূপগঞ্জ, কাঁচপুর ব্রিজ এলাকায় তারা নিয়মিত ডাকাতি ও ছিনতাই করে বেড়াতো।

ডিএমপির উপ কমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেন, করোনা সংকটের কারণে চুরি-ছিনতাই বেড়েছে এটা ঠিক নয়। বরং অন্য সময়ের তুলনায় রাজধানীতে এসব অপরাধের মাত্রা অনেক কমেছে। থানায় মামলা কিংবা তাৎক্ষনিকভাবেও যদি পুলিশ খবর পায় তাহলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর অপরাধ কমাতে পুলিশের তৎপরতাও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

 

ভয়েস টিভি/এমএইচ

You may also like