Home সারাদেশ কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে ভোগান্তি ছিন্নমূল মানুষের

কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে ভোগান্তি ছিন্নমূল মানুষের

by Shohag Ferdaus
ভোগান্তি ছিন্নমূল মানুষের

দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ। করোনা আর শীতের প্রভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

দরিদ্রপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষেরা এই শীতে চরম বিপাকে পড়েছে। নিজেদের বাড়ি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জায়গায় বস্তার বেষ্টনি দিয়ে তাবু টাঙিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। কনকনে তীব্র শীত উপেক্ষা করে দিন-রাত পার করছে সেই ঝুপড়ি ঘরেই। এর মধ্যে অনেকে অর্থাভাবে খাট কিনতে না পারায় মাটিতে খড়ের বিছানা পেতে রাত কাটাচ্ছে। এই বস্তার ঘরেই ছোট্ট সংসার।

ধরলা নদীর তীরবর্তী শহর রক্ষা বাঁধেও আশ্রিত আছে অনেকে। তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে কোনোরকমে দিনাতিপাত করছে তারা। গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঘরের ছাউনি বেয়ে ভিজে যায় বিছানা। প্লাস্টিক বা পলিথিন দিয়ে তীব্র ঠান্ডা মোকাবিলা করতে হচ্ছে এসব ছিন্নমূল মানুষদের।

করোনা ও শীতের প্রভাবে দিন-মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষকে নাকাল হতে হচ্ছে। ঠিকমতো কাজ না জোটায় সংসার চালানো দায়, সেখানে শীতবস্ত্র কেনা কিছুটা স্বপ্নের মতো। করোনা আর শীতে শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। আয় কমে যাওয়ায় হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ পুরাতন কাপড় অথবা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা মেলে না।

ভোগান্তি ছিন্নমূল মানুষের

দিনের বেলায়ও কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে প্রকৃতি। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে শীতের তীব্রতা। ফলে ঘন কুয়াশায় দিনের বেলায়ও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। দেশের বৃহৎ নদীময় জেলায় রয়েছে প্রায় পাঁচশতাধিক চরাঞ্চল। এসব চরাঞ্চলবাসী শীত, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

মজনা বেগম বলেন, শীতের প্রভাবে নাতি নাতনিকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে শীত মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

নদী ভাঙনে জায়গা জমি হারিয়ে এখন নিঃস্ব রিকশা চালক ইব্রাহিম আলী। তিনি এখন রেলস্টেশনের পাশের একটি খোলা জায়গায় বস্তা দিয়ে টাঙানো ঝুপড়ি ঘরে ছেলে মেয়ে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘মেম্বার-চেয়ারম্যান কাইয়ো খোঁজ-খবর নেয় না। রিকশা চালিয়ে যেটুকু আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না হামাক। যেন সরকার ঘর করি দেয়।’

যাত্রাপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান রহিম আহমেদ রিপন বলেন, প্রতিবছরই কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সরকারিভাবে যেসব শীতবস্ত্র দেয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে শীতবস্ত্রের মূল্য হ্রাস করার দাবি জানান তিনি।

জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, ৩৫ হাজার কম্বল ৯টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রণালয় থেকে ৬ লাখ করে ৯টি উপজেলায় ৫৪ লাখ টাকা শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুকনো খাবার বরাদ্দ মজুদ রয়েছে ৯ হাজার প্যাকেট এবং শীত মোকাবিলায় হতদরিদ্রের জন্য আরও এক লাখ কম্বল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে রাতে ক্ষুধার্তদের জন্যে বিনামূল্যে বিরিয়ানি

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like