বাংলা চলচ্চিত্রে আধুনিক ফাইটিং দৃশ্যের জনক বলা হয় তাকে। একাত্তরের রণাঙ্গনেও লড়েছেন বীরের মত। আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন।
ঢাকাই সিনেমায় যিনি পরিচিত পেয়েছেন জসীম নামে। সিনেমার পর্দায়, বিটিভির দুপুরে চটপটি কিংবা ঝালমুড়ি বিক্রেতা কখনও আবার ঠেলাওয়ালা জসীম হয়ে উঠেছিলেন শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি।
১৯৭২ সালে দেবর চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জসীমের রূপালী যাত্রা। তবে দেওয়ান নজরুল পরিচালিত দোস্ত দুশমন চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি প্রথম বাঙালি দর্শকের হৃদয়ে দাগ কাটেন।
দোস্ত দুশমন ছিল সাড়াজাগানো হিন্দি চলচ্চিত্র শোলের পুনর্নিমাণ। এখানে তিনি গাফফার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। খোদ শোলে ছবির নামকরা চরিত্র গব্বার সিং এর আদলে থাকা ভারতীয় খলনায়ক আমজাদ খান পর্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন জসিমের, এমনটাই জানা যায় তৎকালীন সিনেমা সাময়িকীগুলো থেকে।
জসীমের খলনায়ক চরিত্রের সমাপ্তি ঘটে ‘সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি তাকে। এই নায়কের হাত ধরেই ঢাকা পেয়েছে একের পর এক দর্শক নন্দিত চলচ্চিত্র।
শাবানা ও রোজিনার সাথে জসীম ছিলেন বেশি জনপ্রিয়। এই দুই নায়িকার সাথেই সর্বাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
শুধু নায়ক কিংবা ভিলেন নয়, জসীম ছিলেন একজন চলচ্চিত্র প্রযোজকও। আর আধুনিক বাংলা সিনেমায় যে মারামারির শব্দ শোনা যায় এর উদ্ভাবকও বলা হয় ফাইট ডিরেক্টর জসীমকে।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই নায়ক একাত্তরের রণাঙ্গনে রেখেছেন নায়কোচিত ছাপ। একজন সৈনিক হিসেবে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি।
১৯৯৮ সালের ৮ই অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যান এই নায়ক। তবে আজও তাকে ভোলে নি ঢাকাই সিনেমা। এফডিসিতে জসীমের নামে নির্মিত শ্যুটিং ফ্লোর সেই সাক্ষ্য নিয়েই দাঁড়িয়ে আছে।
ভয়েস টিভি/আরআর/এমএইচ