Home বিশ্ব ভয়াবহ টুইন টাওয়ার হামলার ১৯ বছর

ভয়াবহ টুইন টাওয়ার হামলার ১৯ বছর

by Newsroom
টুইন টাওয়ার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ১৯ বছর আজ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার ১৯ জঙ্গি চারটি বিমান ছিনতাই করে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি জায়গায় আত্মঘাতী হামলা চালায়।

এরমধ্যে দুটি বিমান দিয়ে আঘাত করা হয় নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে, একটি আঘাত করে ওয়াশিংটনের পেন্টাগনে, আরেকটি বিধ্বস্ত হয় একটি মাঠে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত সবচেয়ে বড় এই সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় প্রায় ৩ হাজার লোক। আহত হন ৬ হাজারের বেশি মানুষ।

ভয়াবহ এই হামলা স্তম্ভিত করে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। ঘটনাটি ছিল যেন অকল্পনীয়, এবং কী করে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে এমন একটা আক্রমণ ঘটে যেতে পারলো কেউই যেন তা ভাবতে পারছিলেন না।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, কেউ কেউ এ হামলার কথা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন।

হামলা চালানোর আগে সকাল ৮টা ১৯ মিনিটে একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট সতর্ক করেন, তাদের উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছে। ককপিট থেকে কোনো উত্তর আসছে না এবং ছিনতাইকারীদের কাছে বিস্ফোরক রয়েছে।

এছাড়া জানানো হয়, এক যাত্রীসহ দুজন অ্যাটেনডেন্টকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পরে জানা যায়, হামলার শিকার হওয়া ওই যাত্রীর নাম ড্যানিয়েল লেউইন। তিনি ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।

ধারণা করা হয়, ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি এবং নাইন-ইলেভেনের হামলায় তিনিই প্রথম ভুক্তভোগী।

সেদিন হোয়াইট হাউসেও একটি বিমান বিধ্বস্ত করতে চেয়েছিল জঙ্গিরা, কিন্তু তা পেনসিলভেনিয়ায় ভেঙে পড়ে।

টুইন টাওয়ারের ঘটনায় ২ হাজার ৯৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছিলো। যাদের মধ্যে ২ হাজার ৭৫৩ জনের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল, বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

হামলার দিন ফ্লোরিডার একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তিনি ৮টা ৫৫ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিমান হামলার ঘটনা জানতে পারেন। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫৪ মিনিটে হোয়াইট হাউসে আসেন বুশ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওভাল থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন।

ভাষণে তিনি বলেছিনে, সন্ত্রাসী হামলা আমাদের উঁচু ভবনের ভিত নাড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিত স্পর্শও করতে পারবে না। যারা এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এবং যারা তাদের আশ্রয়দাতা, তাদের দুই দলের মধ্যে কোনো পার্থক্য আমরা করব না।

টুইন টাওয়ারে হামলার নেপথ্যে আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। প্রথমদিকে তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানান।

২০০১ সালের নভেম্বরে মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানের জালালাবাদ থেকে একটি ভিডিও রেকর্ডার উদ্ধার করেন। ভিডিওতে দেখা যায়,  লাদেন খালেদ আল-হারবির সাথে কথা বলছেন এবং এই হামলার সম্পর্কে তার জানার বিষয়টি স্বীকার করছেন।

নাইন-ইলেভেনের প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিলেন আল-কায়েদার সদস্য খালিদ শেখ মোহাম্মদ। তিনি পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৩ সালের মার্চে রাওয়ালপিন্ডি থেকে সিআইএ ও আইএসআইয়ের যৌথ অভিযানের সময় গ্রেফতার হন তিনি।

নাইন-ইলেভেন নামে পরিচিত এই সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই সন্ত্রাসবাদ দমনে আরও কঠোর হয় যুক্তরাষ্ট্র, আর সেই সঙ্গে বদলে যায় বিশ্ব রাজনীতির গতিপ্রকৃতি।

ভয়েস টিভি/টিআর

You may also like