সিনহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের জবানবন্দি রেকর্ড করতে না পারায় তদন্ত রিপোর্ট শেষ করতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। তাই সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিতে পারবেনা এ কমিটি। ৩০ আগস্ট রোববার এ বিষয়টি জানান তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তদন্তের কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন তাঁরা। এ পর্যন্ত কমিটি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৬৭ জনের জবাববন্দি গ্রহণ করেছে। শুধু প্রদীপ কুমার দাশের জবানবন্দি নিতে পারেনি। তাঁর জবানবন্দি নিতে পারলেই রিপোর্ট শেষ করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে পারবে কমিটি।
মিজানুর রহমান জানান আজ রোববার দুপুরে কক্সবাজার হিলডাউন সার্কিট হাউজে কমিটির সভার পর রিপোর্ট জমা দিতে কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে।
মিজানুর রহমান বলেন, আমরা চলতি মাসের শেষের দিকে ২৯ ও ৩০ আগস্ট যেকোনো একদিন প্রদীপ কুমার দাশের সাক্ষাৎ পেতে আদালতে আবেদন করেছিলাম, কিন্তু র্যাব তৃতীয় দফার রিমান্ডে নিয়ে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে না। এখন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখবে কমিটি।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৩ আগস্ট প্রথমে সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার ঘোষণা দিয়। এ কমিটির বাকি সদস্যরা হচ্ছেন চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ এবং কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান আলী।
আনুষ্ঠানিকভাবে ৪ আগস্ট তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে কমিটি। পরে গত ১৬ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় সাত কর্মদিবস এবং সর্বশেষ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তৃতীয় দফায় আরো সাত দিন তদন্ত কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময়ের মধ্যে ওসি প্রদীপের জবানবন্দি গ্রহণের চেষ্টা করে কমিটি। কিন্তু ওসি প্রদীপ র্যাবের রিমান্ডে থাকায় তাঁর জবানবন্দি নিতে পারেনি।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে টেকনাফ উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহার আদালতে ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ওই হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ভয়েস টিভি/টিআর