সৈয়দপুরের কামারপুকুরে আকলিমা বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে গলায় রশি পেঁচিয়ে তার মরদেহ ফেলে রেখেছিলো তিন যুবক। পরে এটি আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য মরদেহের পাশে সিগারেটের প্যাকেটের কাগজে ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লিখে ফেলে যায় ধর্ষণকারীরা। ধর্ষকদের রেখে যাওয়া চিরকুট আর পেন্সিলই শেষমেষ ধরিয়ে দিলো হত্যাকারীদের। পরে পুলিশ দুই ঘাতককে গ্রেফতার করলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২৯ আগস্ট শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান নীলফামারীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- কামারপুকুর ইউনিয়নের কাঙ্গালুপপাড়ার আব্দুল করিমের ছেলে আনারুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমানের ছেলে মোহাম্মদ শুভ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ২৩ আগস্ট সকালে কামারপুকুর ইউনিয়নের কিছামত এলাকা থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় আকলিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে একই এলাকার আবেদ আলীর মেয়ে। আট বছর আগে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া এলাকার শরিফুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামীর পরকিয়ার কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত এবং আকলিমাকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন শরিফুল। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়িতে চলে যান আকলিমা। সেখানের গিয়েও তাকে গালমন্দ করায় ক্ষোভ ও অভিমানে বাবার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে ২৩ আগস্ট দুপুরে গলায় রশি পেঁচানো আকলিমার লাশ কিছামত এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ডার্বি সিগারেটের প্যাকেটের কাগজে লেখা ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ ও পেন্সিলের টুকরো অংশ নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এক পর্যায়ে কিসামত এলাকায় ছদ্মবেশ ধারণ করে সিগারেট গ্রহণকারীদের হাতের লেখা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। যার মধ্যে চিরকুটটির লেখার সঙ্গে মিলে যায় আনারুলের হাতের লেখার। পরে তাকে এবং শুভকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আকলিমাকে ঘটনার দিন রাতে ধর্ষণ করে হত্যা করে এবং তারা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে বৈদ্যুতিক পোলের নিচে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় বলে স্বীকার করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরও একজন এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আগেই গ্রেফতার হওয়া স্বামী শরিফুলকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অশোক কুমার পাল উপস্থিত ছিলেন।
ভয়েস টিভি/এসএফ