Home সারাদেশ ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ফাঁস করায় গৃহবধূকে মারপিটের অভিযোগ

ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ফাঁস করায় গৃহবধূকে মারপিটের অভিযোগ

by Amir Shohel

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ফাঁস ও থানায় মামলা করায় এক গৃহবধূ ও তার স্বামীকে মারপিটের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমের নির্দেশে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের কারিগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গৃহবধু মনোয়ারা বেগম ও তার স্বামী আবু বক্কার সিদ্দিক কৈখালী ইউনিয়নের শৈলখালী গ্রামের বাসিন্দা। কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম (৪২) জয়াখালী গ্রামের শেখ আবু দাউদের ছেলে। চেয়ারম্যানের সহযোগী শহিন আলম (৪০) একই গ্রামের মোজাম্মেল গাজীর ছেলে।

কৈখালী ইউনিয়নের শৈলখালী গ্রামের ওই গৃহবধূ বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম মোবাইল ফোনে আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়। রাজি না হলে প্রতিবেশী অপর এক গৃহবধূর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। আমাকে রাজি করতে পারেনি। গৃহহীন প্রকল্পের ঘর দেবেন বলে আশ্বস্ত করে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও ঘুষ নেন চেয়ারম্যান। টাকা ফেরৎ চাইলে তালবাহানা শুরু করে। এরপর তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হন।

ওই গৃহবধূ জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর টাকা ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে যান চেয়ারম্যান। এরপর ইউনিয়ন পরিষদের তিনতলায় চেয়ারম্যানের রেস্টরুমে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। চেয়ারম্যানের সহযোগী শাহিন আলম দরজার বাইরে পাহারা দিচ্ছিলেন। পরে হাতেপায়ে ধরে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাই।

এ ঘটনায় ১৫ জুলাই শ্যামনগর থানায় আমি মামলা দায়ের করি। এরই মধ্যে চেয়ারম্যানের কুপ্রস্তাতের সেই কল রেকর্ড বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ৭ অক্টোবর বুধবার ওই মামলায় চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েই পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে কারিগর পাড়া এলাকায় স্বামী ও আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। চেয়ারম্যানের নির্দেশে এই মারপিট করে সহযোগী শাহিন আলম। মারপিটের সময় বলে, তুই মামলা করলি কেন। রেকর্ড ফাঁস করলি কেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, ঘটনা সবগুলোই ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য পরিকল্পনা। আমার বিরুদ্ধে যে ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যে মামলা দিয়েছে সেটিতে আমি আদালত থেকে জামিন নিয়েছি। তাছাড়া এখন যে মারপিটের ঘটনা বলছে সেটিও সঠিক নয়। শাহিনের সঙ্গে তাদের তর্ক হয়েছে। কোন মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রেজাউল জনগণ থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে ইন্দন দিয়ে এসব করাচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে শাহীন আলম বলেন, মিথ্যে মামলা দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। এখন মারপিটের যে অভিযোগ করছে সেটি সঠিক নয়।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম ও সহযোগী শহিন আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টার মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলেই আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। মামলায় জামিন নিয়ে বাদীকে মারপিটের ঘটনাটি আমার জানা নেই।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like