আওয়ামী লীগের চাঁদপুর পৌর মেয়র প্রার্থী অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের জেএমসেন গুপ্ত রোডে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
আগামী ১০ অক্টোবর শনিবার অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হবে বলে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল নির্বাচনী ইশতেহারে বলেন, বিপুল সম্ভাবনাময় চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রী যতবার এসেছেন, ততবারই তিনি নদীকেন্দ্রিক পর্যটনের তাগিদ দিয়েছেন। সেই সম্ভাবনার আদলে চাঁদপুরকে পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়ার মিলনস্থলকে নান্দনিকভাবে গড়ে তোলা হবে।
সবুজায়ন, দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর মাধ্যমে শহরের নতুন বাজার ও পুরান বাজার শহর রক্ষা বাঁধে রিভার ড্রাইভ গড়ে তোলা হবে। ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীতে ভাসমান রেস্তোরাঁ, ওয়াটার বাস চালু করা হবে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের জন্যে পৌরসভার অর্থায়নে একটি আধুনিক আবাসিক হোটেল নির্মাণ করা হবে।
চাঁদপুর শহরকে বিলবোর্ড মুক্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নান্দনিক চাঁদপুর শহর গড়ে তুলতে এসবি খাল ও বিদ্যাবতি খালের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে মূল নদীর সঙ্গে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। শহরের লেকগুলোর দুই প্রান্ত বাঁধাই করে ফোয়ারা নির্মাণ করে দৃষ্টিনন্দন করা হবে।
বহুতল ভবন বিশিষ্ট একটি আধুনিক সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এতে পাবলিক লাইব্রেরী, আর্কাইভ, মিনি অডিটোরিয়াম, জ্যেষ্ঠ নাগরিক ও নারীদের জন্যে পৃথক পৃথক ফ্লোর থাকবে। এছাড়া পুরান বাজার ও নতুন বাজার অংশে একাধিক মুক্ত মঞ্চ গড়ে তোলা হবে।
পৌরসভার কার্যক্রম প্রযুক্তিনির্ভর ও ডিজিটালাইজড করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকা পর্যায়ক্রমে সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। ড্রেনেজ সিস্টেমে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার করা হবে। পুরনো সড়ক যথাসম্ভব প্রশস্তকরণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। শহরের যানজট নিরসনে একাধিক বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হবে।
শহরের সড়কে এলইডি লাইট স্থাপনের মাধ্যমে আলোকিত চাঁদপুর গড়ে তোলা হবে। সকল নাগরিকদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহসহ আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। শহরের যত্রতত্রের সকল ডাস্টবিন পর্যায়ক্রমে তুলে ফেলাসহ মশক নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
শহরের দুটি অংশেই আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হবে। পুরান বাজার অংশে একটি নতুন গণকবরস্থান তৈরি করা হবে। নারী-পুরুষের জন্যে পৃথক ব্যবস্থা রেখে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ন্যূনতম একটি করে আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে।
মাদক, ইভটিজিং ও কিশোরগ্যাং দমনে পৌরসভা জিরো টলারেন্সে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৌরসভার তত্ত্বাবধায়নে একটি কার্যকরী মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এছাড়া শহরের মাছ বাজারগুলো আধুনিকায়ন করা হবে।
পরিকল্পিত চাঁদপুর শহর নির্মাণে নকশা বহির্ভূত কোন স্থাপনা নির্মাণ হতে দেয়া হবে না। যানজট নিরসনে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা হবে। একই সঙ্গে অবৈধ যান চলাচল করতে দেয়া হবে না। এছাড়া নতুন কোনো সিএনজি অটো রিক্সার লাইসেন্স প্রদান করা হবে না। পৌরবাসীর নাগরিক সেবায় ২৪/৭ ভিত্তিতে হেল্পলাইন চালু করা হবে।
এসময় নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী জিল্লুর রহমান জুয়েল নির্বাচনী ইশতেহারে সবার সহযোগিতা পেলে বাণিজ্য, পর্যটন এবং নান্দনিক চাঁদপুর শহর ঘরে তোলার ক্ষেত্রে সফল হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি পৌরবাসীর দৃঢ় সমর্থন আশা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভয়েস টিভি/এমএইচ
