Home সারাদেশ পাবনায় উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম, ক্ষুব্দ চাকরিপ্রার্থীরা

পাবনায় উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম, ক্ষুব্দ চাকরিপ্রার্থীরা

by Newsroom
নিয়োগে অনিয়ম

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগে অনিয়ম করার অভিযোগ উঠেছে। পত্রিকার মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরখাস্ত আহবান করলেও আবেদনকারীদের না জানিয়ে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আবেদনকারীরা।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের জন্য দরখাস্ত আহবান করে ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল একটি জাতীয় ও সরকারি বিজ্ঞাপন তালিকাভুক্ত না এমন একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৫০০ টাকার ব্যাংকড্রাফটের মাধ্যমে ১৪ জন প্রার্থী ওই পদে আবেদন করেন। কিন্তু র্দীঘদিনেও আবেদনকারীদের কোন নিয়োগ পরীক্ষার কার্ড ইস্যু বা তাদের সাথে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোন ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি।

সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের বেতন শীটে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে নাদিমুল হায়দার ওরফে শিমুল সরদার নাম দেখে আশ্চার্য হন।

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগে থেকে আরো জানা যায়, ওই পদে আবেদনকারীদের মধ্যে ৫ জন ¯œাতক, ১ জন সম্মান ও ৮ জন প্রার্থী সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে এইচএসসি পাশ। প্রার্থীদের শিক্ষাগত সকল যোগ্যতা যাচাইবাচাইকালে দেখা যায়, নিয়োগ প্রাপ্ত নাদিমুল হায়দার (শিমুল সরদার) ওই স্কুল থেকে ২০০০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন।

আরও পড়ুন- সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ; প্রতিবাদ টুয়াকের

২০০২ সালে তিনি সিরাজগঞ্জের চৌহালীর একটি স্কুল থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেখানেও অনুত্তীর্ণ হন। ২০০৪ সালে যশোর বোর্ডের অধীনে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার একটি স্কুল থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০০৬ সালে সাধারণ শিক্ষা বোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হলে ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

ওই পদের আবেদনকারী একাধিক প্রার্থী জানান, ৫০০ টাকার ব্যাংকড্রাফটের মাধ্যমে আমরা অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের পদে আবেদন করার দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও ইন্টারভিউ কার্ড পায়নি। পরে তারা জানতে পারেন নাদিমুল হায়দার নামের একজনের নিয়োগ হয়েছে। ইতোমধ্যে এমপিও অনুমোদন হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মান্না সরদার বলেন, নিয়ম মেনেই ওই পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আবেদনকারীরা যথাসময়ে কোন প্রকার যোগাযোগ করেননি। যারা করেছেন, তাদের নিয়েই এই নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিম আকতার বলেন, নিয়োগ বোর্ডে আমিও ছিলাম। নিয়োগ পরিক্ষার কার্ড পাওয়া না পাওয়ার সঙ্গে শিক্ষা অফিসের কোন সম্পর্ক নেই। এই ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব। তবে ৫’শ টাকার ব্যাংকড্রাফটসহ আবেদন করে করে নিয়োগ পরীক্ষার কার্ড না পওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা থাকতে পারে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নিয়োগপ্রাপ্ত নাদিমুল হায়দার ওরফে শিমুল সরদার বলেন, এই পদে প্রথমবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হলেও সেটি বাতিল হয়ে যায়। দ্বিতীয়বারের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমার চাকুরি হয়েছে। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি স্থানীয় ভাবে যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার বিরুদ্ধে পাবনা জেলার কোন থানায় কোন প্রকার মামলা নেই। আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানান জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তিনি পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধির খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন, প্রথম বিজ্ঞাপনের আবেদনকারীদের সাথে যোগযোগ করেই পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে। এখানে অনৈতিক বা আর্থিক লেনদেনের বিষয় জড়িত নয়। আর কে কোন দল করে, কার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা আছে নিয়োগের সময়ে এটা দেখা হয়নি।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like