Home ভিডিও সংবাদ ৮১৭ বছরের পুরনো নেত্রকোনার হারুলিয়া মসজিদ

৮১৭ বছরের পুরনো নেত্রকোনার হারুলিয়া মসজিদ

by Amir Shohel

৮১৭ বছরের পুরনো নেত্রকোনার ‘হারুলিয়া মসজিদ’। মুঘল আমলে নির্মিত এ সুপ্রাচীন মসজিদটি ইসলামি ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। মসজিদটি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফ্‌ফরপুর ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামে অবস্থিত। মুঘলদের রাজত্বকালে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির অত্যন্ত স্নেহধন্য শাইখ মুহাম্মদ ইয়ার নামে এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ১২শ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। বহুকালের প্রাচীন এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই ওই গ্রামে ছুটে আসছেন আশপাশসহ দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা।

এলাকায় মসজিদটির ইতিহাস নিয়ে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। কেউ বলছেন, মোঘল শাসন আমলে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার কারো মতে, রাজা লক্ষণ সেনের আমলে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। মসজিদের প্রতিষ্ঠা সাল বিষয়ে এলাকার প্রবীণরা জানায়, ১২শ খ্রিস্টাব্দে হারুলিয়া গ্রামে এ মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হারুলিয়া গ্রামেরই বাসিন্দা শাইখ মোহাম্মদ ইয়ার নামে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। মসজিদের মূল প্রবেশপথের উপরে একটি কালো পাথরে ফার্সি ভাষায় মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা শাইখ মোহাম্মদ ইয়ারের নাম ও ১২০০ খ্রিস্টাব্দ প্রতিষ্ঠা সাল লিপিবদ্ধ ছিল বলেও জানান তারা।

এলাকায় মসজিদটি গাইনী মসজিদ হিসাবে পরিচিত রয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা শাইখ মোহাম্মদ ইয়ার একজন গাইন সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। তাই হয়তো মসজিদটি গাইনী মসজিদ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে স্থানীয় প্রবীণ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শাইখ মোহাম্মদ ইয়ার গাইন সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন না। তারা মনে করছেন হয়তো শাইখ মোহাম্মদ ইয়ারের মৃত্যুর পর এখানে গাইন সম্প্রদায় বসবাস করতো। তাই হয়তো তাদের নামানুসারে মসজিদটি গাইনী মসজিদ হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠে।

সুপ্রাচীন এ মসজিদের ভেতরের দেয়ালে ফার্সিতে লেখা শাইখ মোহাম্মদ ইয়ার-এর নাম এবং ১২শ খ্রিস্টাব্দের কথা উল্লেখ থাকায় শাইখ মুহাম্মদ ইয়ারকে এ মসজিদটির প্রতিষ্ঠা মনে করা হয়। মসজিদটি মাত্র সাত শতাংশ ভূমির উপর নির্মিত। মসজিদের চারকোনায় রয়েছে চারটি পিলার। যার ওপরে কলসির আকৃতিতে গম্বুজের কারুকার্য করা। মসজিদের পুরো ছাদ জুড়ে বিশাল একটি গম্বুজও রয়েছে। মসজিদের উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণে তিনটি লম্বা আকারের দরগা এবং সামনের অংশে ছোট্ট একটি চার চালা টিনের ঘরও রয়েছে।

মসজিদের নির্মাণ লৈশী ও অবকাঠামো পোড়ামাটি, লালি, চুন, চিনি, চিটাগুড়, কষ এবং এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে। মুঘল আমলে নির্মিত মসজিদগুলো মধ্যে হারুলিয়া মসজিদও একটি। মসজিদটির সামনে রয়েছে সুবিশাল জালিয়ার হাওর। হাওর সংলগ্ন এ মসজিদটি মুঘল আমলের মানুষের ইবাদত-বন্দেগি ও ইসলামি ঐতিহ্যের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে রয়েছে।

ওডি/এএস

You may also like