জমি নিয়ে বিবাদের জেরে মন্দিরের পুরোহিতকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। ভারতের রাজস্থানের জয়পুর থেকে ১৭৭ কিলোমিটার দূরে করৌলি জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। গ্রামেরই একদল লোক কেরোসিন ঢেলে ওই পুরোহিতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রামের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে পূজা করতেন বাবুলাল বৈষ্ণব নামের ওই ব্যক্তি। নিয়মিত যাতে তিনি পূজাঅর্চনা চালিয়ে যেতে পারেন এ জন্য তাকে মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু শুধু পূজা করে সংসার চলে না। তাই মন্দিরের সম্পত্তি থেকে ১৩ বিঘা জমিতে বাবুলালকে চাষবাসের অনুমতি দেয়া হয়। পূজা এবং মন্দির দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেবায়েত পুরোহিতদের জমি দেয়ার এই প্রথা দীর্ঘকাল ধরেই চলে আসছে। এই ধরনের জমিগুলিকে ‘মন্দির মাফি’ বলা হয়।
কিন্তু এই জমি ঘিরেই বিবাদের সূত্রপাত ঘটে। চাষবাসে সুবিধার জন্য ওই জমি সংলগ্ন এক স্থানে বাড়ি তৈরি করতে উদ্যত হন বাবুলাল। মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া ১৩ বিঘা জমি এবং বাড়ি তৈরির জমির মাঝখানে একটি উঁচু ঢিবি ছিল। মাটি সমান করতে সেই ঢিবি ভেঙে ফেলেন তিনি।
আর তা রুখে দাঁড়ান এলাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মীনা সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ। যে জমিতে বাবুলাল বাড়ি তৈরি করতে উদ্যত হয়েছেন, সেটি তাদের জমি বলে দাবি করেন তাঁরা। গ্রামের মোড়লদের কাছে বিষয়টি পৌঁছলে তারা অবশ্য পুরোহিতের পক্ষেই মত দেন। তার পর ফের বাড়ি তৈরির কাজে হাত দেন তিনি। জায়গাটির ওপর নিজের মালিকানা বোঝাতে সেখানে বাজরার তাড়া স্তূপাকারে রেখে দেন তিনি।
তার পরেও মীনা সম্প্রদায়ের লোকজন মিলে ওই জমিতে নিজেদের একটি কুঁড়েঘর তৈরি করতে শুরু করেন। এতে বাধা দিতে গেলে বাবুলালের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় মীনাদের। একপর্যায়ে মীনারা জমা করে রাখা বাজরার গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে তার গায়েও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় বলে মৃত্যুর আগে জানিয়েছেন বাবুলাল।
পরে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জয়পুরের এসএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বাবুলালকে। ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে মৃত্যু হয় তার।
করৌলির পুলিশ কর্মকর্তা হার্জিলাল যাদব জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে পুলিশের কাছে ছ’জনের নাম উল্লেখ করেন বাবুলাল। তাদের মধ্যে কৈলাস মীনা নামের একজনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। দায়ের করা হয়েছে খুনের মামলা।
আরও পড়ুন: পুরোহিতসহ ৩৬ জন করোনায় শনাক্ত : স্বামীবাগে ইসকন মন্দির লকডাউন
ভয়েস টিভি/এসএফ
