Home বিশ্ব মা-বাবার ফেলে যাওয়া দুই ভাই পেলেন সরকারি চাকরি

মা-বাবার ফেলে যাওয়া দুই ভাই পেলেন সরকারি চাকরি

by Shohag Ferdaus

একই শরীরে বেড়ে উঠেছে দু’টি প্রাণ। এই অবস্থাতেই তাদের একা ফেলে চলে গিয়েছিলেন বাবা-মা। নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে জীবনযুদ্ধে আজ বিরাট সাফল্য পেয়েছে সেই দুটি প্রাণ। আইটিআই থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী সোহনা ও মোহনা এবার পেলেন সরকারি চাকরি।

ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভালো ছিল দুই ভাই। এরপর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন তারা। পড়াশোনা শেষ হতেই এই দুই ভাই এবার চাকরি পেলেন পাঞ্জাব প্রদেশের বিদ্যুৎ বোর্ডে। সরকারি ইলেকট্রিশিয়ান হলেও এটিই ছিল দুই ভাইয়ের স্বপ্নের চাকরি। গত ২০ ডিসেম্বর কর্পোরেশনে চাকরি পেয়েছেন ১৯ বছরের সোহনা ও মোহনা। মাসিক বেতন ২০ হাজার টাকা।

দি ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্যই মাত্র দুই মাস বয়সে সোহনা ও মোহনা সিংকে এতিমখানায় ফেলে গিয়েছিলেন তাদের মা-বাবা। সেখানেই বেড়ে উঠেছেন তারা।

সম্প্রতি সোহনা ও মোহনাকে চাকরির প্রস্তাব দেয় পাঞ্জাব স্টেট পাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড। এই চাকরিতে প্রত্যেকে ১০ হাজার করে দুজনের বেতন ধরা হয় ২০ হাজার রুপি।

দয়া করে নয়, বরং যোগ্যতার বলেই চাকরিটি পেয়েছেন দুই ভাই। সম্প্রতি তারা ইলেকট্রনিকসের ওপর ডিপ্লোমা অর্জন করেন। বর্তমানে তাদের একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিযুক্ত করা হয়েছে। এই কক্ষে থাকা বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম দেখভাল করবেন তারা।

চাকরি পাওয়ার পর দুই ভাই বলেন, ‘আমাদের প্রতিভাকে মূল্যায়ন করার জন্য পাঞ্জাব সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’

সম্প্রতি একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে বিদ্যুৎ বোর্ডের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি কাড়েন সোহনা ও মোহনা সিং। কর্মকর্তারা দেখতে পান, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের প্রতি তাদের ব্যাপক আগ্রহ।

পাঞ্জাবের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান বেনু প্রসাদ জানিয়েছেন, জোড়া লাগানো হলেও কাজের ক্ষেত্রে দুই ভাই দারুণ কৌশলী। তাই প্রতিবন্ধী কোটায় তাদের নিয়োগ দেয়া হয়।

আরও পড়ুন: বেঁচে ফেরা যাত্রীরা দুষছেন সারেংকে

যেখানে সোহনা ও মোহনা সিং বেড়ে উঠেছেন সেই এতিমখানার শিক্ষকরা জানান, শৈশব থেকেই ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ঠিক করায় যমজ দুই ভাইয়ের আগ্রহ ছিল।

পাঞ্জাব সরকারের পাশাপাশি এতিমখানার শিক্ষকদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান সোহনা ও মোহনা সিং। শিক্ষকদের সম্পর্কে দুই ভাই বলেন, ‘তারাই আমাদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলেছেন।’

২০০৩ সালে ভারতের নয়াদিল্লিতে জন্ম নেয়া সোহনা ও মোহনার আলাদা দুটি হৃৎপিণ্ড রয়েছে। দুজনের দুই জোড়া হাতও আছে। কিডনি এবং স্পাইনাল কর্ডও তাদের আলাদা। কিন্তু দুই ভাইয়ের একটি মাত্র যকৃত, একটি পিত্তথলি আর একটি প্লীহা রয়েছে। আর তাদের মাত্র এক জোড়া পা রয়েছে।

এসব কারণেই তাদের আলাদা করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, দুই ভাইকে আলাদা করতে গেলে এক ভাইয়ের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।

আরও পড়ুন: কোনো দেশ একা উন্নতি করতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like