Home ভ্রমণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গজনী অবকাশ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গজনী অবকাশ

by Amir Shohel

সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের গজনী অবকাশ কেন্দ্রে প্রকৃতি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। এখানকার পাহাড়, উঁচু-নিচু টিলা ও সমতল ভূমিতে সবুজের সমারোহ। এর মধ্যে শাল, গজারি, সেগুন, লতাপাতার বিন্যাস প্রকৃতিপ্রেমীদের মনে দোলা দিয়ে যায়। এই পাহাড়ের পাশ ঘেঁষেই ভারতের মেঘালয় রাজ্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি গজনী ইংরেজ শাসনামল থেকেই পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের প্রধান ও উত্তরাঞ্চলের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র গজনী।

১৯৯৩ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবকাশ কেন্দ্রটি তৈরি হয়। জেলা শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়নের প্রায় ৯০ একর পাহাড়ি এলাকা জুড়ে এর অবস্থান। গারো, কোচ, হাজং, বর্মন, বানাই, ডালু ও হদিসহ ৭টি নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস এ পাহাড়ে।

এখানে রয়েছে সারি সরি গজারী, শাল, সেগুন, মহুয়া, আকাশমনি, ইউকেলিপটস, বাঁশ, পাহাড়ি কাঠাঁল, কলা, আনারস, সফেদাসহ নাম না জানা শত শত গাছ-গাছালি এবং লতাপাতার বিন্যাস।

পাহাড়, ঝর্ণা, টিলা, লেক, হৃদসহ প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম সৌন্দর্য মিলে অন্যরকম প্রশান্তি এনে দেয় ভ্রমণকারীদের ক্লান্ত মনে।

লাল মাটির উঁচু-নীচু পাহাড়, ছোট-বড় টিলা, মাঝে সীমান্ত সড়ক সমতল, গহীন জঙ্গল আর ক্ষুদ্র নৃতাত্বিকদের ঘরবাড়ির সৌন্দর্য্য বিষন্ন মনকে করবে উৎফুল্ল। তাই প্রতিবছর শীতকালে গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য্য অবলোকন করতে ভ্রমণপিপাশু মানুষগুলো ছুটে আসেন এ প্রাকৃতিক ‍লীলাভূমি শেরপুরে।

গজনী অবকাশের‌ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য কৃত্রিম ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে ৩৩ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বৃহৎ ডাইনোসোরের ভাস্কর্য। আর এই ভাস্কর্যটি পৃথিবীর বিবর্তনের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয়।

রয়েছে চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্ক, ড্রাগন টানেল, দন্ডায়মান জিরাফ, ডলফিন, পদ্ম সিঁড়ি, লেক ভিউ পেন্টাগন, হাতির প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, গারো মা ভিলেজ, কৃত্রিম জলপ্রপাত, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিফলক।

আর গারো মা ভিলেজে মাশরুম ছাতার নিচে বসে পাহাড়ের ঢালে দিগন্তজোড়া ধান ক্ষেত ও নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীদের জীবনমান উপভোগ করা যায়।
পাহাড়ের চূড়ায় পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট উন্নতমানের দ্বিতল রেস্ট হাউজ।

পাহাড়ের চূড়া থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে ৬৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট সাইট ভিউ টাওয়ার। সাইট ভিউ টাওয়ারের চূড়ায় উঠলে চারদিকে দেখা যায় ধূসর, আকাশী ও সবুজের সমারোহ।

গজনীতে তৈরি করা হয়েছে গ্রীক ধারায় চৌবাচ্চার দুইটি হাঁস এবং পানির খেলা। সাদা সিমেন্ট দ্বারা ঝিলের পাড়ে নির্মিত আছে জলপরী ভাস্কর্য। জলপরীকে দেখে মনে হয়, জলে সাতার কেটে ক্লান্ত হয়ে পানি থেকে মাত্র উঠে শান্ত-ক্লান্ত অবস্থায় বসে আছে।

দর্শনার্থীদের জন্য আছে মিনি চিড়িয়াখানা। ছোট পরিসরের চিড়িয়াখানাটিতে রয়েছে বনবিড়াল, বন্যশুকুর, বক, চিল, ঘুঘু, বানর, পাহাড়ি ইঁদুর, গুঁইসাপ, অজগর সাপ, মেছো বাঘ, হরিণ, ভাল্লুকসহ প্রায় ৪০ প্রজাতির প্রাণী।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like