ঘটনার ২০১৯ সালের ২৬ জুন। বরগুনায় প্রকাশ্য সড়কে স্ত্রীর সামনে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে কতিপয় যুবক। ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায় একজন যুবককে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করছে কয়েকজন যুবক, আর আক্রান্ত যুবককে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন এক নারী।
তিনি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। ভালোবাসাকে বাঁচানোর জন্য নারীর এই প্রানান্ত চেষ্টার ভিডিওচিত্র জল এনে দেয় নেটিনেজদের চোখে। তারা সোচ্চার হয় ঘটনার বিচারের দাবিতে।
মিন্নি আর রিফাতের প্রেমের বিয়ে । কিন্তু রিফাত হত্যার ঘটনাটিও সেই প্রেমকে কেন্দ্র করেই, বলেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী নয়ন বন্ডের সাথে প্রেম ছিল মিন্নির। রিফাতের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ থেকেই তাকে হত্যা করে নয়ন, পুলিশের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।
বরগুনা থানার তৎকালীন ওসির বলেছিলেন, রিফাত ও নয়ন স্থানীয় এক কলেজছাত্রীকে ভালবাসতেন। ঘটনার দুই মাস আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে রিফাত শরীফের বিয়ে হয়। তারপরও নয়ন বন্ড ওই ছাত্রীকে নিজের স্ত্রী দাবি করে আসছিলেন। এই বিরোধের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে প্রথমদিকে কেউই ভাবতে পারেনি এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নিও জড়িত।
আরও পড়ুন- প্রেমিকা থেকে খুনী : বরগুনার রিফাত হত্যা মামলার আদ্যোপান্ত
২৮ জুলাই পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন রিফাত হত্যায় জড়িত তার স্ত্রী মিন্নিও। হত্যাকারীদের সঙ্গে মিন্নি যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন, এরকমই এক তথ্য আসে জেলার পুলিশ প্রধানের কাছ থেকে। এরপরেই পক্ষে বিপক্ষে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। জেলে যেতে হয় মিন্নিকে। এরপর জামিনও মেলে।
কিন্তু মামলার চুড়ান্ত রায়ে ফাঁসির আদেশ এলো মিন্নির। শুধু মিন্নিই নয় একই রায় মিলেছে আরও পাঁচজনের ভাগ্যে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি পাঁচ আসামি হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি , আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন, মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত , রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয় ও মো. হাসান । আর খালাস পেয়েছেন রাফিউল ইসলাম, মো. সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন ও মো. মুসা। তবে খালাস পাওয়া মুসা এখনো পলাতক আছেন।
এদিকে, প্রেমিকা থেকে খুনী খলনায়িকা হয়ে ওঠা মিন্নির কাহিনী এখন সবার মুখে মুখে।
ভয়েস টিভি/ডিএইচ