ফেনীর সোনাগাজীতে আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির কারামুক্তির জন্য দোয়া ও আলোচনা সভা করা হয়েছে।
১৯ জানুয়ারি বুধবার বিকেল ৪টায় ফাঁসির আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনের কারামুক্তি, সুস্থতা কামনা করে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে দোয়া ও মিলাদ পরিচালনা করেন বাসস্ট্যান্ড মসজিদের খতিব মাওলানা মো. ওমর ফারুক।
পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ব্যানারে এর আয়োজন করা হয়। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রুহুল আমিনের একটি টাঙানো লাগানো হয়।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মফিজুল জানান, এই কর্মসূচির সম্পর্কে তিনি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ এই কর্মসূচি সম্পর্কে অবগত নয়।
দোয়া ও আলোচনা সভায় অংশ নেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুল হক বিটু, মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউজ্জামান বাবু, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ভূট্টো, মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাদল, জেলা পরিষদের সদস্য নাছির উদ্দিন আরিফ ভূঞা, চরচান্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মানিক, বগাদানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলা উদ্দিন বাবুল, আমিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরু মেম্বার, ইউপি সদস্য গেদু মিয়া ভূঞা, দীন মোহাম্মদ, মতিগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন টিপু ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেনসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগের বেশকিছু নেতাকর্মী।
২০১৯ সালের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদরাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরখা পরা পাঁচজন। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এবং প্লাষ্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাত মারা যান।
একই বছরের ২৪ অক্টোবর নুসরাত জাহান রাফিকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলা ও আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনসহ ১৬ জনের ফাঁসির রায় দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ।
বর্তমানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা বর্তমানে ফেনী, কুমিল্লা ও কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। রুহুল আমিনও ফেনী কারাগারে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: পিকে হালদারের ‘বান্ধবী’ অবন্তিকা গ্রেফতার