Home সারাদেশ করোনায় স্বপ্ন ভাঙছে কুড়িগ্রামের ফুলচাষিদের

করোনায় স্বপ্ন ভাঙছে কুড়িগ্রামের ফুলচাষিদের

by Shohag Ferdaus
স্বপ্ন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে করোনাভাইরাসের প্রভাবে স্বপ্ন ভাঙছে ফুলচাষিদের। ক্রেতা সঙ্কটে বিক্রি করতে পারছেন না উৎপাদিত ফুল। বাধ্য হয়ে গাছ ভালো রাখার জন্যে ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে।

বাগানে গাঁদা, চন্দ্র মল্লিকা, গোলাপ, প্রজাপতি, কচমচ, ডালিয়া, ক্যাপটাস, ঘাসফুল, এলোবেরা, রঙ্গন, বেলি, গন্ধরাজ ও হাসনা হেনা ফুলের চাষ হলেও করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস ঘুরেও সরকারি সহযোগীতা না পাওয়ার অভিযোগ চাষিদের।

উপজেলার পৌরসভার নারিকেল বাড়ি খামার গ্রামের আব্দুল মজিদ (৫০)। তিনি বিশ বছর ধরে ফুল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জীবনের শুরুতে নানা সংগ্রাম করতে হয় তাকে। প্রবাসেও থেকেছেন নয় মাস। সেখান থেকে ফিরে ১৯৯৬ সালে নার্সারির পাশাপশি ফুল চাষ করেন। নার্সারির শুরুতেই নানা জাতের গাছের চাষ করতেন। তিন সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে বেশ সুখেই ছিলেন তারা। মাঝে মাঝে নিজেই ভ্যান চালিয়ে শহরের অলিতে গলিতে ফুল বিক্রি করতেন। ধীরে ধীরে বয়স বেড়ে যাওয়ায় এখন একমাত্র ছেলে আলমগিরকে দিয়ে ভ্যান চালিয়ে গাছের চারা বিক্রি করান।

আব্দুল মজিদ আরও জানান, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় এক একর জমিতে ফুল চাষ করেন। প্রতি বছর বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ও স্কুল কলেজের গেটে ফুল বিক্রি করে পাঁচ জনের সংসার সুখেই চলছিল। গত মার্চে বিশ্বে করোনাভাইরাস দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায় স্কুল কলেজ। তখন থেকেই ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। প্রতি বছর বৃক্ষ মেলায় অংশগ্রহণ করে বেশ সম্মান জুটলেও এখন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে স্বল্প পরিসরে ফুলচাষ করছেন।

স্বপ্ন

সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় ফুলচাষি আব্দুল মজিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, করোনার কারণে এনজিও থেকে ঋণ নেয়া টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। অতি কষ্টে জীবন-যাপন করলেও সরকারি কোনো সহযোগিতা কিংবা কোন পরামর্শ পাইনি।

এদিকে একই অভিযোগ করেছেন উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের কাশিয়াগাড়ী গ্রামের ফুলচাষি নুর মোহাম্মদ। ৫০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে ফুল চাষ শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি বছরে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করতেন। কিন্তু করোনার কারণে ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।

ফুলচাষী নুর মোহাম্মদ বলেন, ফুলকে কেন্দ্র করেই আমাদের সব কিছু। অথচ ফুল বিক্রি করতে পারছি না। ফুল গাছে শুকিয়ে যাচ্ছে। গাছ বাঁচিয়ে রাখার জন্য ফুল ছিড়ে ফেলে দিচ্ছি। জানি না কিভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব। কোনো ধরনের সরকারি সুবিধা পাইনি। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আর ঘুরে দাঁড়াতে পারব না।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, করোনাকালে ফুলচাষিদের জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। ফুলচাষীদের খোঁজখবর নিয়ে ভালো চারা উৎপাদন, রোগবালাই প্রতিরোধসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হবে।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like