Home সারাদেশ বাংলাদেশের জামাতা ছিলেন প্রণব মুখার্জি

বাংলাদেশের জামাতা ছিলেন প্রণব মুখার্জি

by Shohag Ferdaus
বাংলাদেশের জামাতা

ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের জামাতা। স্বাধীনতার সূচনালগ্ন থেকে জীবনের শেষ অবধি তিনি বাংলাদেশের পরম বন্ধু ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার দুই তনয়া শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে পরম মমতায় আগলে রেখেছিলেন ভারতের এই জনপ্রিয় রাজনীতিক।

ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আরেকটি পরিচয় বাংলাদেশের নড়াইল জেলার সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামের জামাই তিনি। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ২০১৩ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশে তিন দিনের সফরে এসেছিলেন। তদখন তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। গিয়েছিলেন শ্বশুরালয়েও।

জানা যায়, ভদ্রবিলা গ্রামের মেয়ে শুভ্রা মুখোপাধ্যায়। ছোটবেলায় যাকে আদর করে ডাকা হত ‘গীতা’ বলে। নড়াইলের সেই ‘গীতা’ নামের মেয়েটিই ভারতবাসীর কাছে ‘শুভ্রা মুখার্জি’ নামে পরিচিত। যিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী। গ্রামের সাধারণ মেয়ে থেকে তিনি হয়ে যান ভারতের রাষ্ট্রপতির স্ত্রী।

শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের জীবনী থেকে জানা যায়, ১৯৪৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে বাবা অমরেন্দ্র ঘোষ ও মা মীরা রানী ঘোষের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শুভ্রার শৈশবের প্রথম দিকটা নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে নিজবাড়িতে (পিত্রালয়) কাটলেও পরবর্তীতে মামাবাড়ি তুলারামপুরে চলে যান। মামাবাড়ি থেকে স্থানীয় চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে ১৯৫৫ সালের দিকে মায়ের সঙ্গে ভারতের কলকাতায় চলে যান শুভ্রা।

৯ ভাই-বোনের মধ্যে শুভ্রা ছিলেন দ্বিতীয়। পরবর্তীতে তার অন্য ভাই-বোনেরা ভারতে চলে গেলেও নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে বসবাস করছেন শুভ্রার ভাই কানাই লাল ঘোষ। ভদ্রবিলার পৈতৃক ভিটা ও জমিজমা দেখাশোনা করেন তিনি (কানাই লাল)। শুভ্রার মামাতো ভাইয়েরা বসবাস করছেন তুলারামপুর গ্রামে। প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বিয়ের পর নড়াইলের মেয়ে ‘গীতা ঘোষ’ পরিচিতি পান ‘শুভ্রা মুখার্জি’ হিসেবে।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী শুভ্রা পেশায় ছিলেন শিক্ষক। গাইতে পারতেন রবীন্দ্রসংগীতও। লিখেছেন ‘চোখের আলোয়’, ‘চেনা অচেনায় চীন’, ‘INDIRA GANDHI IN MY EYES’ (আমার চোখে ইন্দিরা গান্ধী) প্রবন্ধ গ্রন্থসহ গল্প ও ফিচার।

শুভ্রা মুখোপাধ্যায় ‘চোখের আলোয়’ গ্রন্থে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, তার (শুভ্রা) বয়স তখন ১৪, প্রণব মুখার্জির বয়স ২২ বছর। সেই বয়সে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। শুভ্রা ও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দুই ছেলে অভিজিৎ মুখার্জি ও সুরজিৎ মুখার্জি এবং মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি মুন্নি। ভারতে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত তারা।

শুভ্রা মুখার্জির মামাতো ভাই নড়াইলের তুলারামপুর গ্রামের কার্তিক ঘোষ জানান, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মামা শ্বশুরবাড়ি আমাদের তুলারামপুর গ্রাম। বিশেষ করে গীতা দিদির শৈশব কেটেছে আমাদের বাড়িতেই। দিদি তুলারামপুরে থেকে চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছেন দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। তারপর চলে যান ভারতে।

কার্তিক বলেন, ১৯৯৫ সালে মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি মুন্নিকে নিয়ে দিদি আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তবে সে সময় সঙ্গে ছিলেন না আমাদের জামাইবাবু প্রণব মুখোপাধ্যায়। পরে ২০১৩ সালের ৫ মার্চ জামাইবাবুকে (প্রণব মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে করে নড়াইলের ভদ্রবিলার বাড়িতে আসেন গীতা দিদি। তখন প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like