Home অর্থনীতি ব্যাপক হারে ডলার কিনছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ব্যাপক হারে ডলার কিনছে বাংলাদেশ ব্যাংক

by Newsroom
বাংলাদেশ ব্যাংক

স্থানীয় মুদ্রার মান ধরে রাখতে বাজার থেকে ব্যাপক হারে ডলার কিনছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ৩৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার কিনেছে।

ফলে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার কেনার পরিমাণ দাঁড়াল ৫৮৮ কোটি ডলার।

তবে গত জানুয়ারি মাসে ডলার কেনা তুলনামূলক কমিয়েছে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বাজার থেকে ডলার কেনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। গত ফেব্রুয়ারি শেষে রিজার্ভ বেড়ে আবারও ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের ঘর ছাড়ায়। অচিরেই এ রিজার্ভ ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে বলে আশা করছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর।

৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। গত বছর জানুয়ারি মাসে ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা। ফেব্রুয়ারিতে ডলারের দর বেড়ে ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সায় দাঁড়ায়। তবে জুনে ডলারের দর কমে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে। এরপর থেকে এ দর অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষের কয়েক মাস করোনার কারণে সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ায় ওই অর্থবছরে সব মিলিয়ে বাজার থেকে ৮৭ কোটি ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সময়ে বাজারে ৮৩ কোটি ডলার জোগানও দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ২৩৪ কোটি ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৩১ কোটি ডলার বিক্রি করে ব্যাংকগুলোর কাছে।

তবে করোনা মহামারীর মধ্যেও গত কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো থাকায় দেশে বিদেশি মুদ্রার সরবরাহ বেশি। একই সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্যও ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে। ফলে ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত ডলার জমা হচ্ছে। এ কারণে চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে রেকর্ড পরিমাণ ডলার বাজার থেকে কিনতে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।

অবশ্য ডলার কেনার বিষয়টিকে ইতিবাচক উল্লেখ করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এ সময়ে ডলার না কিনলে ডলারের রেট আরও কমে যেত। তখন বাজার ভারসাম্য হারাত। শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারতও প্রতি মাসে কয়েকশ কোটি ডলার বাজার থেকে কিনছে।’

‘তবে ডলার কেনার ফলে বাজারে যে পরিমাণ টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়ছে তাতে ব্যাংকগুলোর তারল্য আরও বেড়ে যেতে পারে। এমনিতেই ব্যাংকগুলোর কাছে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার মতো উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে’ যোগ করেন তিনি।

এর আগে ২০১৩-১৪ বাজারের উদ্বৃত্ত বিদেশি মুদ্রা কমিয়ে বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে ৫২০ কোটি ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে দেশে প্রবাস-আয় বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। এ সময়ে প্রবাসীরা মোট ১ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ১০৪ কোটি ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে রপ্তানি আয় কমেছে ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরের রপ্তানি কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আমদানিও প্রায় ৭ শতাংশ কমেছে। গত অর্থবছরে আমদানি কমেছিল ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

 

You may also like