Home বিশ্ব কাল ভোট, ট্রাম্প নাকি বাইডেন?

কাল ভোট, ট্রাম্প নাকি বাইডেন?

by Shohag Ferdaus
ট্রাম্প

কাল এক ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দেবেন আমেরিকান জনগণ। যুক্তরাষ্ট্র গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। মিত্র বা শত্রু দেশগুলোর পছন্দ হোক বা না হোক; আন্তর্জাতিক নানা নিয়ম-কানুন যুক্তরাষ্ট্রই ঠিক করে দিয়েছে এবং সবাইকে তা মানতে বাধ্য করেছে। তাই এই ভোট শুধু আমেরিকার জন্যে নয় পুরো বিশ্বের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। পুরো পৃথিবী তাকিয়ে আছে আগামীকালের মার্কিন নির্বাচনের দিকে।

এ নির্বাচনে রিপাপলিকানদের হয়ে লড়ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প। আর ডেমোক্রাটদের হয়ে লড়ছেন জো বাইডেন। এর মধ্যে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতীক হাতি আর জো বাইডেনের গাধা। নির্বাচনে আগাম ভোট পড়েছে ৯ কোটি ২০ লাখেরও বেশি। রয়টার্স বা ইপসোসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে নির্বাচনে জো বাইডেন এগিয়ে রয়েছে। তবে এবারও চমক দেখিয়ে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কারণ সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যান মতে, জো বাইডেন এগিয়ে থাকলেও ট্রাম্পের সঙ্গে তার ব্যবধান সামান্যই।

চার বছর আগে জয়ী হয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে চমক ধরে রাখার প্রত্যাশায় ট্রাম্প দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে রীতিমতো ঘূর্ণি প্রচার চালাচ্ছেন। করোনায় ভোগা এই প্রেসিডেন্ট ২০১৬ সালের প্রচার ভোলেননি, সে আদলও ছাড়েননি। এবারও সেই একই চিত্রনাট্য বিপুল জনতা, গণমাধ্যমকে গালি, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর সকৌতুকে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ধরাশায়ী করার চেষ্টা। নিজে করোনায় ভোগার পরও গণমাধ্যমের চোখে ‘লোক-দেখানো সার্কাস’ নামে অভিহিত জনসভার পরীক্ষিত এই কাঠামো থেকে বের হননি ট্রাম্প।

আর প্রচলিত এই কাঠামোর মধ্যে একটিবারের জন্যও প্রবেশ করেননি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। ছোট ছোট সমাবেশ, সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, রস নয় পরীক্ষিত তথ্য আর পরিসংখ্যান নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীকে আক্রমণ চালানো, সর্বপরি দলের পূর্ববর্তী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের নেতিবাচক ভাবমূর্তির আবহ থেকে বের হয়ে আসা এবং শুধু করোনাভাইরাসকে সঙ্গী করে নির্বাচনী প্রচারের এই কঠিন তরিকে প্রায় তীরে ভিড়িয়ে ফেলেছেন বাইডেন। অন্তত শেষ মুহূর্তের জরিপগুলো সে আভাসই দিচ্ছে। রয়টার্স বা ইপসোস বলছে, জাতীয়ভাবে দুই অঙ্কের সংখ্যায় এগিয়ে আছেন তিনি। আর দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর একটিতেও প্রেসিডেন্ট তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। যদিও ব্যবধান খুব বেশি নয়।

এবার অবশ্য ভাগ্যও বাইডেনের পক্ষে বলেই মনে হচ্ছে। প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকেই এগিয়ে সব ধরনের জরিপে এগিয়ে তিনি। সর্ব শেষ প্রকাশিত রয়টার্স অথবা ইপসোসের জরিপে দেখা যায়, জাতীয়ভাবে বাইডেন (৫১%) ট্রাম্পের (৪৩%) চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। গত ২৭-২৯ অক্টোবর এ জরিপ চালানো হয়। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেও এগিয়ে বাইডেন। তবে ব্যবধান কম। লড়াই মূলত হবে এই রাজ্যগুলোতেই। এগুলোর সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই নির্বাচিত হবেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নানা কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক। ঐতিহাসিক কারণ বাইডেন জিতলে তিনিই হবেন দেশের প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গী কমলা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট হলে, সেটাও হবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে তিনিই হবেন দেশের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত সে বিষয়টিও ভুলে গেলে চলবে না।

আর যদি ট্রাম্পই জিতে যান! তা হলে তিনি হবেন অভিশংসনের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি জনপ্রিয়তার নিরিখে অনেকখানি পিছিয়ে থেকেও পুনর্নির্বাচিত হলেন। পপুলার ভোটে গতবার হিলারির চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। এবারও নিশ্চিতভাবেই বলে দেয়া যায় অন্তত এ ক্ষেত্রে বাইডেনকে ছাড়াতে পারবেন না তিনি। তাঁর যত মারপ্যাঁচ সবই ইলেকট্রোরাল ভোটকে কেন্দ্র করে।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like