Home সারাদেশ পরিষ্কার হচ্ছে বিস্ফোরণের কারণ

পরিষ্কার হচ্ছে বিস্ফোরণের কারণ

by Newsroom
বিস্ফোরণের

গ্যাস লাইনের লিকেজই মুসল্লিদের জীবনের কাল হলো। অসংখ্য লিকেজের খোঁজ মিলেছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বাইতুস সালাত মসজিদটির ভেতরে। ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে অনেকটাই পরিষ্কার হচ্ছে বিস্ফোরণের কারণ।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদটি এখন পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ফ্যানগুলো বেঁকে গেছে। দুমড়েমুচড়ে গেছে সবকটি এসি। জানালার কাচ ছড়িয়ে আছে মেঝেতে।
যে মসজিদে প্রতি ওয়াক্তে মুসল্লিদের ভিড় থাকতো সেখানে আজ ফজরের নামজ পড়তে আসেননি কেউ। পড়ে আছে তসবিহ, পুড়ে গেছে জায়নামাজ। যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে হতভাগ্য মুসল্লীদের নানা সামগ্রী।

আগুনে পোড়া গন্ধ পড়ে থাকা মুসল্লিদের পকেটের টাকা, জুতো, সেন্ডেলই জানান দিচ্ছে কয়েক ঘণ্টা আগেও এখানে মুসল্লীরা মসজিদে ভিড় করেছিলেন ইবাদতের উদ্দেশ্যে। কিন্তু তারা কি জানতো গ্যাস লাইনের অসংখ্য লিকেজের করণে মসজিদে গ্যাস জমছে। এ থেকে বিস্ফেরণ হতে পারে। আর তাতেই তাদের দেহ ঝলসে যাবে। কারো কারো জন্য এটাই হবে জীবনের শেষ ইবাদত।

স্রষ্টার সৃষ্টির নিয়মে তা কারোরই জানার কথা না। কিন্তু গ্যাস লাইনের অসংখ্য লিকেজের কারণে মসজিদে গ্যাস জমার কারণেই যদি বিস্ফেরণ হয় এর দায় কে নিবে। আদো কি এ দায় কেউ নিতে চাইবে।

তবে স্থানীয়দের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, অনেকদিন ধরেই এই মসজিদের নিচে তিতাসের লাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস বের হবার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু বাড়বাড় তিতাসকে অভিযোগ করা সত্ত্বেও তারা গুরুত্ব দেয়নি। আজকে তাদের অবহেলা জন্য এই অবস্থা।

মসজিদটি মিথেন গ্যাসে পরিপূর্ণ ছিলো বলে জানান ঘটনাস্থলে উদ্ধার করতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। সেখান থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা তাদের। আগামী ১০ দিনের আগেই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার আশাবাদ দেন ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের উপ পরিচালক নূর হাসান।

এছাড়া উদ্ধার করতে যাওয়া এলাকাবাসী জানায়, মসজিদের ফ্লোর দিয়ে বুদবুদ আকারে গ্যাস বের হচ্ছিলো। মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাস গ্যাসের লাইন আছে। এই লাইনের লিকেজের কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে।

কিন্তু ভয়াবহ বিস্ফেরণের পর টনক নড়ে তিতাস কর্তপক্ষের। আগে লিকেজ সারাতে না আসলেও ঘটনার পর লিকেজ সারাতে শ্রমিক পাঠায় তারা।

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. আল-মামুন জানান, মসজিদ কমিটি থেকে লিকেজ সংস্কারের কোন অভিযোগ পায়নি তিতাস কর্তৃপক্ষ। তবে তদন্ত হচ্ছে গ্যাস লাইনের লিকেজ ছিল কিনা। তদন্তে কারো অবহেলা গাফিলতি পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ততক্ষণে শুক্রবার এশার নামাজের সময় হঠাৎ বিকট শব্দে ৬টি এসি বিস্ফোরণে ৪০ জন দগ্ধ। এর মাঝে ৩৭ জন শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মঝে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মসজিদের মুয়াজ্জিন ও জুয়েল নামে এক শিশুসহ ১২জনের মৃত্যু হয়েছে।

দগ্ধ আরও ২৬ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। বেশিরভাগের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

ভয়েস টিভি/টিআর

You may also like