নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় নাজিমুল ইসলাম তামিম (২ বছর ৯ মাস) নামের এক শিশুকে বিক্রি করার চার দিন পর দুই দালালসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
১৫ নভেম্বর রোববার দুপুর ৩টার দিকে আটক আসামিদের গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৪ জনকে আটক করে এবং বিক্রি করা শিশুটি উদ্ধার করে।
এর আগে, গত ১০ নভেম্বর প্রতারণা করে শিশুটি বিক্রি করে দেয় তার নানা-নানী। ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুটির নানা-নানীকে আটক করলে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুুই দালালসহ ৪ আসামিকে আটক করে পুলিশ।
আটকরা হলো, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার দক্ষিণ টুমচর গ্রামের আলা উদ্দিন (৪৫), নিলুফা বেগম (৪০) ও সেনবাগ উপজেলার উত্তর শাহাপুর গ্রামের আবু তালেব (৩৮), সালমা আক্তার (২৫), আবুল খায়ের (৬৫), জামাল উদ্দিন (৩৮)।
পুলিশ ও শিশুর মা জানায়, শিশু নাজিমুল ইসলাম তামিম বেগমগঞ্জ উপজেলার মীররওয়ারিশপুর এলাকায় নানা-নানীর কাছে ভাড়া বাসায় থাকতো। শিশুটির মা একজন কর্মজীবি মহিলা। ২০১৭ সালে তার প্রথম বিবাহ হয়। এরপর ২০২০ সালে ওই স্বামীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয়। বর্তমান স্বামীর সঙ্গে বিবাহের পর আগের সংসারের ছেলেকে তার পিতা-মাতার কাছে রেখে বর্তমান স্বামী ঘরে চলে যায়। একপর্যায়ে শিশুটির নানা-নানী শিশুটির ভরণপোষণে অক্ষমতা প্রকাশ করে।
পরে আবু তালেব এবং সালমা বেগমের নিকট ছেলেকে দত্তক দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। শিশুর মা দত্তক দিতে অস্বীকার করায় আসামিগণ পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলক ভাবে শিশুর মায়ের কাছ থেকে থেকে একশত টাকা মূল্যের তিনটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে গত ১১ নভেম্বর শিশুটির মা ফেনীর বর্তমান স্বামীর বাসা থেকে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেগমগঞ্জে পিতার বাসায় আসে। ওই দিন আশপাশের লোকজন তাকে টাকার বিনিময়ে ছেলেকে বিক্রি করার অপবাদ দিতে থাকে। ওই বিষয়ে তিনি তার পিতা-মাতাকে জিজ্ঞাসা করলে তারা ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করে।
পরে মা বাবার কাছে ছেলের সন্ধান লাভে ব্যর্থ হয়ে থানায় অভিযোগ করলে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ শিশুর নানা-নানীকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে সেনবাগ উপজেলার ৬ নম্বর কাবিলপুর ইউনিয়নের উত্তর শাহাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হয়েছে। মামলার আলোকে আসামিদের গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভয়েসটিভি/এএস