Home অর্থনীতি বেড়েছে কেরুর মদের চাহিদা, ১৯৫ কোটি টাকা আয়

বেড়েছে কেরুর মদের চাহিদা, ১৯৫ কোটি টাকা আয়

by Amir Shohel

দেশীয় ব্র্যান্ড কেরু অ্যান্ড কোংয়ের মদের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ অবস্থায় মদের উৎপাদন বাড়াচ্ছে কেরু। ২০২০-২১ অর্থবছরে মদ থেকে ১৯৫ কোটি টাকা আয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত কয়েক বছর ধরে মদ বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ায় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো লাভের মুখ দেখছে কেরু অ্যান্ড কোং। ভবিষ্যতে আরও লাভের আশা করছে তারা। ডিস্টিলারি বিভাগ ছাড়া চিনি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোসহ সব ইউনিটে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বছরের পর বছর লোকসান দিয়ে চলছে। তবে ডিস্টিলারি ইউনিট কেরুর আয়ের অন্যতম উৎস।

জানা গেছে, শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধার অপব্যবহার রোধে তৈরি একটি সফটওয়্যার ব্যবহার নিয়ে এনবিআর ও বেসরকারি কূটনৈতিক বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোর মধ্যে রেষারেষির কারণে সরবরাহ কমে গেছে বিদেশি মদের। এর জেরে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে কেরুর মদের চাহিদা।

শনিবার চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চিনিকলে আখ মাড়াই কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘কেরুকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান করতে হলে কেরু অ্যান্ড কোংয়ের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে। উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে দর্শনায় কেরুর দ্বিতীয় একটি ইউনিট হবে। কারণ কেরুর মদের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জৈব দ্রাবকের মতো অন্যান্য পণ্যের চাহিদা রয়েছে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্তার্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লে দেশের বাজারেও বাড়ে। তবে আমদানিনির্ভর দ্রব্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে উপজেলা পর্যায়ে টিসিবি কার্যক্রম শুরু করা হবে। আশা করি, আগামী তিন মাসের মধ্যে টিসিবির চার-পাঁচশ ট্রাক নামানো হবে।’

একই অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, দেশের কোনও চিনিকল স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়নি। চিনিকল আধুনিকায়নের জন্য সাময়িকভাবে কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পুনরায় সব কারখানা চালু করা হবে। দেশের কোনও চিনিকল বন্ধ হবে না।

আখের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন, কৃষিপণ্য উৎপাদনের ব্যাপারে সরকার সর্বোচ্চ সুবিধা দেয়। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হবে। কৃষকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।

গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরে কোম্পানিটির উৎপাদিত মদের বিক্রি ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি তাদের দুটি ডিস্টিলারি প্ল্যান্টে উৎপাদন বাড়িয়েছে।

কেরু অ্যান্ড কোংয়ের কারখানা সূত্র জানায়, কেরু অ্যান্ড কোং প্রতি মাসে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার কেস মদ উৎপাদন করতো। চলতি মাসে প্রতিষ্ঠানটি ২০ হাজার কেসের বেশি মদ উৎপাদন করেছে। দেশের দুই পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় দুটি নতুন বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করছে প্রতিষ্ঠানটি। আগে প্রতি মাসে সাধারণত কেরুর মদ প্রায় সাড়ে ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার কেস বিক্রি হলেও এ বছরের অক্টোবরে এই সংখ্যা ১৮ হাজার ৫৭৯ কেস এবং নভেম্বরে ১৯ হাজার ৪৪৬ কেসে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় আরও দুটি বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করছে তারা।

কেরু অ্যান্ড কোংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ম্যানুয়াল সিস্টেম ব্যবহার না করে অটোমেশনের মাধ্যমে মদের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি আমরা। প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মদের উৎপাদন দ্বিগুণ হবে।’

লোকসানের অবসান ঘটিয়ে কেরুর চিনিকে কীভাবে লাভজনক করতে হবে সে বিষয়ে মোশারফ হোসেন বলেন, ‘কারখানা সংস্কারের পর উৎপাদন বাড়বে। সেই সঙ্গে বিক্রিও বাড়বে।’

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like