নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক মাদরাসা ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও চিত্র ধারণের অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বেগমগঞ্জ থানায় একই এলাকার রাসেল (২৫), জোবায়ের (২৪), সাইফুল ইসলাম ইমন (২২) এবং ফয়সাল নামের চার যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার পর রাতেই বেগমগঞ্জ পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে ওই ছাত্রী প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে বলেও জানা গেছে।
ভুক্তভোগীর মা জানান, ২০১৮ সাল থেকে একই এলাকার ইমন, রাসেল আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে। এ বিষয়ে তাদের নিষেধ করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, ‘আমাদের কথায় রাজি না হলে তোর মেয়েকে মেরে ফেলবো’।
এরপর একদিন রাসেল ও ইমন আমাদের বাড়িতে এসে কৌশলে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। পরে অস্ত্রের মুখে মেয়েকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। ধর্ষণ শেষে এক দোকানিকে ডেকে এনে জোর করে মেয়ের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করে পুনরায় ভিডিও ধারণ করে।
তিনি আরও জানান, পরে ওই ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় এবং একাধিকবার তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। বাধ্য হয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েও রেহাই পাইনি। বিয়ের পরে মেয়ে বেড়াতে আসলে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
উঠিয়ে নেয়ার তিন মাস পরে রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মিরপুরের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে আনি। এ ঘটনার ১৫ দিন পর রাসেল পুনরায় মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ১০ দিন পর আবারও ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে আসি।
সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর রাসেল আবার আমার মেয়েকে নিয়ে যায়। এখনো সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে জানি না। গত সপ্তাহে রাসেল প্রস্তাব দিয়েছে এবার এক লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
ভুক্তভোগীর মা জানান, দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খোলেননি। এবার থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাননি। বর্তমানে তারা অসহায় হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাহায্যে পুনরায় আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।
বেগমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান সিকদার জানান, ভুক্তভোগীর মায়েল অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যা: গ্রেফতার আরও ১
ভয়েস টিভি/এমএইচ