কুড়িগ্রামে জমির নামজারি এবং খারিজের বিপরিতে প্রকাশ্যে ঘুষ নেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা। তার উপরের বসদের দোহাই দিয়ে অনায়সে তিনি ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘুষের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও অভিযোগ না থাকার অজুহাতে ব্যবস্থা নিতে নারাজ স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষরা জিম্মি হয়ে পড়ছেন।
জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ঘুষছাড়া কোন কাজেই হাত দিতে রাজি নন তিনি। নামজারি ও জমা খারিজ নিতে তাকে দিতে হয় ৫ হাজার হতে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ।
জমির পরিমাণ কিংবা ব্যক্তির অবস্থা দেখে টাকার অংকটা আরো বেড়ে যায়। আর সাধারণ মানুষের কাছে জমিজমা সংক্রান্ত কাজে ঘুষ যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দারিদ্রপীড়িত আর নদী ভাঙ্গা এলাকার সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ না করেই ঘুষের টাকা দিতে অনেকটাই বাধ্য। এমনকি কেউ জমিজমার বিষয় খোঁজ নিতে গেলেও ঘুষ দিতে হয় তাকে। অফিসে বসেই প্রকাশ্যে দেন-দরবার এবং ঘুষের লেনদেন করেন। দীর্ঘদিন ধরে এই ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তার দ্বায়িত্ব পালন করছেন তিনি
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন আছে জমির মালিকদের বিপদে ফেলে ২০ থেকে ৮০হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষের টাকা দাবি করার। কেউ চাহিদা মতো ঘুষ দিতে না পারলে তার কাজ হয়না। ফলে অনেকেই দালালের মাধ্যমে কম টাকায় জমির খারিজ করে নেন। ঘুষের টাকা দেবার পরেও সেবা না পেয়ে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়।
সম্পদহানী অথবা ধারদেনা করেই সেবা নিতে হচ্ছে গ্রাহকদের। ফলে এলাকায় এই কর্মকর্তার নাম হয়েছে কসাই। নামজারি এবং খারিজে সরকারি মূল্য তালিকা না থাকায় সাধারণ মানুষকে হতে হয়রানির স্বীকার। ঘুষের টাকা দিতে না পারায় অনেকের এখনো জমির খারিজ হয়নি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীরঝাড় ইউনিয়রের উপ সহকারী নজরুল ইসলাম ভূমি কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, লক্ষ-লক্ষ অভিযোগ মানুষ দিতে থাক। আমার উপরেও তো বিগ বসেরা আছেন। তাদের ছায়া রয়েছে আমার মাথার উপরে।
এ বিষয়ে আন্ধারীরঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ খোকন জানান উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের ঘুষ বাণিজ্যের কথা। কারো তোয়াক্কা না করে উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তার ঘুষের হার দিনদিন বেড়েই চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের টাকার বিনিময়ে এক আধিপত্যে তালিকা করায় মেম্বারদের হাতে উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম লাঞ্চিত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি না হলেও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা ফোনে বিরক্ত হয়ে উল্টো প্রশ্ন করেন,কোন অফিসে টাকা পয়সার বিষয়ে অভিযোগ নেই।
সাব-রেজিস্টার, ভূমি অফিস, বিআরটিএসহ সব অফিসেই অভিযোগ আছে। অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে আর লিখিত অভিযোগ দিলে তারপর ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন তিনি।
ভয়েস টিভি/ডিএইচ