Home সারাদেশ সোনাগাজীতে ১৪৪ ধারায়ও ঠেকানো যাচ্ছে না ভূমি দখল

সোনাগাজীতে ১৪৪ ধারায়ও ঠেকানো যাচ্ছে না ভূমি দখল

by Newsroom
ভূমি দখল

ফেনীর সোনাগাজীতে প্রকাশ্যে  সরকারি খাস ভূমি দখল করে নিচ্ছে ভূমিদস্যু চক্র। বেপরোয়া এ চক্রকে  থামাতে উপজেলা প্রশাসন ওইসব স্থানে বেশ কয়েকবার ১৪৪ ধারা জারি করেও দমন করা যায়নি।  এই চক্রের মুলোৎপাটন করতে অভিযানের পর অভিযান চালিয়েও তেমন কোন পরিবর্তন আনতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরখোয়াজের লামছি, থাক খোয়াজের লামছি ও মুহুরী নদীর তীরে জেগে ওঠা কলমির চরে চলছে ভূমিদস্যুদের জবর দখলের মহোৎসব। করোনায় অচলাবস্থার সুযোগে স্কেভেটর দিয়ে তিনটি মৌজায় দিনে রাতে পালা করে জমির মাটি বিক্রি ও পুকুর খনন করে দখল করে নিচ্ছে তারা। চলছে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের অপচেষ্টা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, রহস্যজনক কারণে প্রকৃত ভূমিদস্যু ও দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিতে পারায় চক্রটি এ ধরনের বেপরোয়া হয়ে গেছে।

তারা জানান, ফেনীর সোনাগাজী ও মীরসরাই উপজেলার একটি শক্তিশালী ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট এর পেছনে রয়েছে।

ভূমি দখল

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব জানান, তাদের দমাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে আগেই ঘটনার মূলহোতারা প্রতিবারই পালিয়ে গেছে। তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে কয়েক জন শ্রমিককে পৃথক অভিযানে আটক করে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছিল। এছাড়া মাটি কাটার যন্ত্রপাতিও জব্দ করা হয়েছে।

ইউএনও জানান, অভিযানে একটি স্কেভেটরে অগ্নিসংযোগ, একাধিক স্কেভেটর ভাংচুর ও বিকল করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে না পেরে বেশ কয়েকবার ওইসব এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু এরপর দিনের বদলে রাতের আঁধারে শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। আমরা শীঘ্রই আবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করব।

আরও পড়ুন- জাতিসংঘ পুরস্কার পেল ভূমি মন্ত্রণালয়

এদিকে স্থানীয়রা জানায়, ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকা অবস্থায়ও ভূমিদস্যুরা পুকুরে মাছের পোনা বা মাছ ছেড়ে মাছও চাষ শুরু করেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভূমিদস্যুদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ। চক্রটির কাছে যেন ভূমি কর্মকর্তরাও অসহায় হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর’ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অধিগ্রহণের জন্য খোয়াজের লামছি, চরখোন্দকার ও চরখোয়াজের লামছির নাম প্রস্তাবনা করা হয়েছে। ফলে ওই তিন মৌজার হাজার হাজার একর সরকারি ও নিরীহ কৃষকদের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জবর দখল অব্যাহত রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার নিজাম জমিদার, জসিম উদ্দিন বোল্টা, মাছ কাদের, ইকবাল হোসেন, নূরনবী মিস্টার, ফজলু, হুমায়ূন কবির, সেলিমসহ আরো অনেকে এ চক্রের পেছনে রয়েছে।

নিজাম জমিদারের কাছে ভূমি দখল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু ভূমি মালিক এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করছে। তারা টাকার বিনিময়ে জমিতে পুকুর কেটে দিচ্ছে। আমরা তাদের কাছ হতে পরবর্তীতে জমি বন্দক নিচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আরেফিন জানান, এসব জমি দখলমুক্ত করতে অভিযানে আরও জোরদার করা উচিত।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like