কয়েক দফা বন্যায় দেশের ৩৩টি জেলা পানিতে নিমজ্জিত ছিল প্রায় দেড় মাস। ৩১টি জেলার পানি ইতোমধ্যে নেমে গেছে। এখনও দুইটি জেলা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পানি নেমে গেলেও বানে ভেসে গেছে এসব জেলার কয়েক হাজার মাছচাষির স্বপ্ন।
মৎস্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, শুধু চলমান বন্যাতেই ৩৮২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষির সংখ্যা ৪৭ হাজার ৬৬২। আর ১৩ হাজার ২০১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জলাভূমির মাছ ভেসে গেছে।
মৎস্য অধিদফতরের হিসাবে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়। এ জেলায় মোট ৫২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার ঘের-পুকুরের বিপুল পরিমাণ মাছ ভেসে গেছে।
তবে বেসরকারি সংস্থা বিসেফ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চলমান বন্যায় মাছচাষিদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আরেক হিসাবে দেখা গেছে, বন্যায় এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মৎস্যজীবী এ ক্ষতির শিকার হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা দীর্ঘমেয়াদে পুষ্টিহীনতা ও দারিদ্র্যের মুখে পড়তে যাচ্ছেন বলে সংস্থাটির গবেষকেরা মনে করছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবী ও চাষিদের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। কোনো ভুল যাতে না হয়, সে জন্য আবার তা খতিয়ে দেখছি। এই চাষিদের সহায়তা দিতে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে আমাদের কথাও হয়েছে। আশা করি, তাদের কাছ থেকে আমরা সহায়তা নিয়ে মৎস্য চাষিদের পুনর্বাসন শিগগিরই শুরু করতে পারব।’
মৎস্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক আরিফ আজাদ জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে চাষিদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রতিবছর উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের পোনা ছাড়ার জন্য একটি বরাদ্দ থাকে। বন্যার এই সময়ে উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা ছাড়লে, তা আবারও ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, আরেক দফা বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই বরাদ্দ ও সরকার থেকে আরও কিছু অর্থ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিনা মূল্যে পোনা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ভয়েস টিভি/নিজস্ব প্রতিবেদক/এসএফ