সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের গাছা চোরাবাল্লে খালে গত চার বছর ধরে অবৈধ নেটপাটা দিয়ে চলছে মাছ চাষ। ফলে প্রতি বছরই বৃষ্টির মৌসুমে খালের দুই পাশে অন্তত এক হাজার বিঘা কৃষি জমি ও মৎস্য ঘের ডুবে থাকে পানিতে। ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক কৃষক ও মৎস্য চাষী তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কয়েক দফা অভিযোগ দিলেও লাভ হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে, শুক্তিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য গণেশ চন্দ্র বর্মন প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ গাছা বাজার সংলগ্ন বিলের চোরাবাল্লে খালটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে দেয়া হয় মাছ চুরির মামলা।
খলিষখালি ইউনিয়নের বিশেষকাটি গ্রামে ঠাকুর দাস মণ্ডল, গুরুপদ মণ্ডল, শিবপদ বিশ্বাস, কৃষ্ণপদ মণ্ডল এবং গাছা গ্রামের কমল মণ্ডল, কুমোদ মণ্ডলসহ আরও গ্রামবাসীরা জানান, গাছা চোরাবাল্লে খালটি দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। খালের দুই পাশের জমিতে গ্রামবাসীরা মাছসহ ধান চাষ করেন। কিন্ত বর্ষা মৌসুমে খালটি দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয় না। আবার শুষ্ক মৌসুমেও মৎস্য ঘেরের পানি ওই খাল দিয়ে বের করা সম্ভব হয় না। শুক্তিয়া গ্রামের গণেশ বর্মন প্রভাব খাটিয়ে খালটি দখলে রেখেছেন। খালে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, গতবছর জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল জেলার নেটপাটা অপসারণের নির্দেশ দিলে অন্যত্র এ নির্দেশ বাস্তবায়িত হলেও এ খালে সেটি সম্ভব হয়নি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় গত বছর তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন খালটিতে থাকা অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করতে আসলেও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় তিনি ফিরে যান।
এদিকে গ্রামবাসীরা নেটপাটা সরানোর উদ্যোগ নিলে গণেশ বর্মন ইতোপূর্বে ৩২ জন গ্রামবাসীর নামে মাছ চুরির মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। খলিষখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আক্তার হোসেন এই খাল থেকে প্রতিবছর লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নিয়ে খালটি দখল করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে অভিযো রয়েছে।
চোরাবাল্লে খাল দখলকারী খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গণেশ বর্মন জানান, পাটকেলঘাটা ভূমি অফিস ও খলিষখালী ভূমি অফিস জানে খালটি তিনি দখল করে মাছ চাষ করেন। পানি নিষ্কাশনে কোনো সমস্যা হয় না।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, উপজেলার সকল খালের অবৈধসহ নেটপাটা অপসারণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভয়েস টিভি/এসএফ