Home সারাদেশ দিনদুপুরে ফিল্মি কায়দায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ‘অপহরণ ও ধর্ষণ’

দিনদুপুরে ফিল্মি কায়দায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ‘অপহরণ ও ধর্ষণ’

by Mesbah Mukul

টেকনাফে টমটম থেকে তুলে নিয়ে মার্কেটের কক্ষে উচ্চ আওয়াজে স্পিকার বাজিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে। স্পিকারের ধুমধাড়াক্কা আওয়াজে মিলিয়ে ১৬ বছরের মাদ্রাসা ছাত্রী মাহির (ছদ্মনাম) আত্মচিৎকার মিলিয়ে গেলেও মিলিয়ে যায়নি তার ধর্ষণের কলঙ্ক। সকাল বেলা এমন পরিবেশে মাহি কয়েকদফা ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

ধর্ষক তজিল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাজম পাড়ার আবদুল রকিম বলির ছেলে। ইতোমধ্যে দু’টি বিয়ে করেছেন।

দুপুরে  ঘটনাস্হলে পুলিশ আসবে মোবাইল ফোনে জানতে পেরে ধর্ষক পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে মাহিকে নিয়ে সটকে পড়ে। সেখানেও চলে রাতভর ধর্ষণ। পরের দিন সকালে একটি টমটমে করে কিশোরী মাহিকে পৌঁছে দেওয়া হলো ঘরে। ৩৫ বছরের বিবাহিত যুবক মো: তজিল ধর্ষকের লোমহর্ষক এসব বক্তব্য ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রী মাহির। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ ডিসেম্বর সকালে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়া পাড়া মোড়ে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। ভূক্তভোগীর মা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছে। ধর্ষনের শিকার ‘মাহি’কে উদ্ধার করে মেডিকেল টেস্ট শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে জবানবন্দি প্রদান শেষে মায়ের হেফাজতে দেওয়া হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল গোদারবিল রিয়াদুল জান্নাহ মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রীর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাশাপাশি গ্রামের বিবাহিত যুবক মো: তজিলের। সে বিভিন্ন সময়ে ওই পরিবারের সদস্যদের উপর চাপ দিতে থাকে। বাড়ি ঘরে হামলা-ভাংচুর ও অন্যান্য সদস্যদের উপর আক্রমণ ও হয়রানি করে যাচ্ছে। যাতে ওই মেয়েকে তজিলের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৯ মে মাদ্রাসা ছাত্রী মাহির বড় বোন টেকনাফ ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্রীকে বাড়িতে ঢুকে মারধর করে এবং মাহির ব্যাপারে বাধা হয়ে না দাড়াতে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মাহির বড় বোন। পরবর্তীতে টেকনাফ মডেল থানার এসআই মিল্টনের মধ্যস্হতায় এটির সমাধানও হয়। কিন্তু সমাধান শেষ না হতেই তজিল মেতে ওঠে নতুন খেলায়।

মেয়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থী মাহিকে খোনকার পাড়া নানার বাড়িতে সরিয়ে রাখা হয়। মাহি সেখান থেকে সকালে প্রাইভেট পড়তে আসত গোদারবিল। ঘটনার দিনও মাহি প্রাইভেট পড়তে আসছিল। সেখান থেকে তাকে তুলে দিনে ও রাতে ধর্ষণ করে তজিল।

এ ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ধর্ষনের শিকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মা লিখিত অভিযোগ দেয় এসআই মিল্টনের হাতে। পূর্ব পরিচিতি হওয়ায় এসআই মিল্টন অভিযুক্ত মো: তজিলের সাথে যোগাযোগ করে অন্যত্র সরে যেতে বলে।

মাদ্রাসা ছাত্রী মাহির অভিযোগ ‘আমাকে টমটম থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে আর একটা টমটমে তুলে কিছু দূর নিয়ে একটি দুতলা মার্কেটের উপর তলায় আটকে রেখেছে মো: তজিল। সেখানে তার ইচ্ছে মত মারধর ও ধর্ষণ করেছে। পুলিশ আসার আগে মোবাইল ফোনে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়। যার কারণে আমাকে আবার সেখান থেকে নিয়ে অন্য একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে পুরো রাত ধর্ষণ ও নির্যাতন চালায়।

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবদুল আলিম ভয়েস টেলিভিশনকে জানান, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর মাদ্রাসা ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।’

এ দিকে মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগী পরিবারের উপর চাপ দিয়ে যাচ্ছে অভিযুক্ত মো: তজিল। সে মোটর সাইকেল মহড়া চালিয়ে মাহির নিজ বসত ঘর ও নানার ঘরে গিয়ে হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে মামলার বাদী। এতে চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে পরিবারটি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো: তজিল বলেন, ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। পরিবার বাধা দিচ্ছে। তাই সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এটি মিমাংসা হয়ে যাচ্ছে বলেও দাবী করেন অভিযুক্ত মো তজিল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিল্টন ভয়েস টেলিভিশনকে জানান, ‘আগের অভিযোগ সূত্রে অভিযুক্ত মো: তজিলের সাথে যোগাযোগ হয়েছিল তা ঠিক, তবে এ ঘটনায় তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।’

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like