শরীর সুস্থ রাখতে সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ, তাপ উৎপাদন করার জন্য ও নিজেদের কর্মক্ষম রাখতে সুষম খাবারের বিকল্প নেই।
খাদ্যের প্রধান ছয়টি উপাদান: শর্করা, আমিষ, স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাবার, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি।
আমিষ আমাদের খাদ্যের ছয়টি উপাদনের একটি। এটি হলো সব জীবের মুখ্য উপাদান। ২০টি বিভিন্ন রকম এমিনো এসিডের নানা রকম সমন্বয়ে গঠিত হয় এক একটি আমিষ। অধিকাংশ আমিষে ১০০ থেকে ১০০০টি এমিনো এসিড থাকে।
আমাদের জনগোষ্ঠীর আমিষ ঘাটতির কারণ একাধিক। আমিষ প্রধান খাদ্যের দাম অধিক হওয়ায় অধিকাংশ মানুষ নিয়মিত মাছ, মাংস, ডিম, দুধ বা ডাল জাতীয় দানা শস্য তাদের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে না। ফলে খাদ্যে আমিষ ঘাটতি হওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
আমাদের দেহে আমিষের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলো হলো আমিষ এনজাইমে রূপান্তরিত হয় আর এনজাইম কোষে সংঘটিত সব বিক্রিয়ার অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। আমিষ কোষের গাঠনিক উপাদান। আমিষ DNA ও RNA তৈরির জন্য এমিনো এসিড সরবরাহ করে। আমিষ কোষের নানা রকম কার্যাবলির নিয়ন্ত্রক। আমিষ দেহের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন হয়।
শরীরের প্রতিটা অংশ এবং কোষে প্রোটিন রয়েছে। শরীর গঠন ও বৃদ্ধির জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। প্রোটিন সাধারণত অ্যামিনো অ্যাসিড দিয়ে তৈরি। যেসব খাবার থেকে প্রোটিন পাই বিভিন্ন প্রাণিজ উৎস যেমন: মাছ, মাংস বিশেষ করে ডিমের ভেতর প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন শিম, বিভিন্ন ধরনের শস্যদানাও প্রোটিনের অন্যতম উপাদান।
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতিদিন দুই-তিনবার আমিষযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। শরীরের গঠন অনুযায়ী একেকজনের ক্ষেত্রে একেক নিয়ম হতে পারে। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেন, শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে, তখন থেকে তার প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের ভেতরে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে।
১৮ বছর বয়স পর্যন্ত একজন মানুষের প্রতিদিন ২-২ দশমিক ৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন দুই-তিনবার প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। তবে বয়সভেদে এবং স্বাস্থ্যভেদে প্রোটিনের প্রয়োজন ভিন্ন হতে পারে।